সোনিকার সঙ্গে ঝগড়া হয়েছিল কি

ওই সময়ে দু’জনের মধ্যে কোনও অশান্তির জেরেই কি বিক্রম আরও জোরে গাড়ি চালাচ্ছিলেন, তা জানতেই আপাতত আদা-জল খেয়ে জেরা চালাচ্ছেন তদন্তকারী অফিসারেরা।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৭ ০১:৩০
Share:

রহস্যের জট পুরোটা খুলতে আপাতত চাই স্রেফ একটা প্রশ্নের জবাব। দু’মাস আগে মডেল সোনিকা সিংহ চৌহানের দুর্ঘটনায় মৃত্যুর রাতে ঘটনা-পরম্পরা খুঁটিয়ে দেখলে একটাই ‘মিসিং লিঙ্ক’ দেখতে পাচ্ছে পুলিশ।

Advertisement

সোনিকাকে নিজের গাড়িতে বাড়ি পৌঁছে দিতে ২৯ এপ্রিল রাত সওয়া তিনটে নাগাদ স্টিয়ারিংয়ে বসেন বিক্রম চট্টোপাধ্যায়। ঠিক তার আগে খানিকক্ষণ সুইনহো লেনে বিক্রমের বাড়ির কাছে কোথাও ছিলেন, তাঁরা দু’জন। ওই সময়ে দু’জনের মধ্যে কোনও অশান্তির জেরেই কি বিক্রম আরও জোরে গাড়ি চালাচ্ছিলেন, তা জানতেই আপাতত আদা-জল খেয়ে জেরা চালাচ্ছেন তদন্তকারী অফিসারেরা।

আরও পড়ুন: থানার কুটকুটে কম্বলেই রাত কাটল বিক্রমের

Advertisement

টালিগঞ্জ থানার লক-আপে বন্দি অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে এই জবাবটুকু কার্যত পাখির চোখের মতো নিশানা করেছে পুলিশ। টিভি-তারকাকে আলাদা বসিয়ে রেখে তাঁর উপরে খানিকটা মানসিক চাপ সৃষ্টির চেষ্টাও চালাচ্ছে তদন্তকারী দল। ঘুরেফিরে একটি প্রশ্নই নানা ভাবে বিক্রমের সামনে পেশ করা হচ্ছে।

এই একটি প্রশ্নকে কেন এত গুরুত্ব দিচ্ছে পুলিশ?

পুলিশের দাবি, রাত আড়াইটে নাগাদ ভবানীপুর এলাকার নাইট ক্লাব থেকে বেরোন বিক্রম-সোনিকা। দু’জনে গিয়েছিলেন কসবার সুইনহো লেনের কাছে। পুলিশের অনুমান, কম-বেশি ২৫-৩০ মিনিট ওই তল্লাটে গাড়িতেই ছিলেন তাঁরা। তদন্তকারী এক অফিসারের বক্তব্য, ‘‘বিক্রম ওই রাতে যথেষ্ট মদ খেয়েছিলেন বলে আমাদের হাতে ইতিমধ্যে প্রমাণ এসেছে। এখন দেখছি, গাড়িতে সোনিকার সঙ্গে তাঁর কোনও রকম মন কষাকষি হয়েছিল কি না! কোনও কারণে বাড়তি উত্তেজনায় বিক্রম আরও জোরে গাড়ি চালিয়ে দুর্ঘটনা ঘটান কি না, বোঝার চেষ্টা করছি।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, বিক্রম অবশ্য এখনও খোলসা করেননি, তাঁরা কী নিয়ে কথা বলছিলেন। বিক্রমের থেকে জবাব আদায় করতে তাঁকে সুইনহো লেনের কাছের ওই জায়গাটিতে নিয়েও যেতে পারে পুলিশ। জনৈক পুলিশকর্তার দাবি, ঘটনাস্থলে নিয়ে গেলে আবেগতাড়িত হয়ে বিক্রম এখনও না-বলা কিছু তথ্য দিয়ে ফেলতে পারেন, যা সোনিকার মৃত্যুর রহস্য সমাধানে নতুন মাত্রা জুড়তে পারে।

বাস্তবিক, পুলিশ ও সোনিকার পরিবার সূত্রের দাবি, ওই রাতের দু’দিনের মধ্যেই বেঙ্গালুরুতে ঠাকুরদা-ঠাকুরমার কাছে যাওয়ার কথা ছিল সোনিকার। মাস দুয়েকের জন্য কলকাতা ছেড়ে যাবেন বলেই ওই রাতে শহরের বন্ধুদের সঙ্গে নাইট ক্লাবে গিয়েছিলেন সোনিকা। তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, বেঙ্গালুরুতে সোনিকার সঙ্গে আর কার দেখা হতে পারে তা নিয়েও তাঁর সঙ্গে বিক্রমের কিছুটা মনোমালিন্য হয়ে থাকতে পারে। এই বিষয়ে নিশ্চিত হতেই জেরা চালাচ্ছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন