এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
এসএসকেএম হাসপাতালে নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে আগেই তথ্যতলব করেছিল পশ্চিমবঙ্গ শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগ। এ বার ওই ঘটনার তিন দিন পরে হাসপাতাল পরিদর্শনে গেল রাজ্যের ওই কমিশনের প্রতিনিধিদল। শনিবার দুপুরে হাসপাতাল পৌঁছে যায় ওই আয়োগের এক তথ্যানুসন্ধানী দল। রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগের চেয়ারপার্সন তুলিকা দাসও ছিলেন সেখানে। এসএসকেএম হাসপাতাল চত্বরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কী রয়েছে, কী ভাবে তা আরও বৃদ্ধি করা যায়— সেগুলি শনিবার খতিয়ে দেখেন তিনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সংস্থা এবং পুলিশকে নিয়ে একটি বৈঠকেও বসেন শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগের প্রতিনিধিরা। হাসপাতালের ‘ট্রমা কেয়ার সেন্টার’ও ঘুরে দেখেন তাঁরা।
এসএসকেএম হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কী রয়েছে, তা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন তুলিকা এবং আয়োগের প্রতিনিধিদলের সদস্যেরা। বৈঠকের পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে মৌখিক ভাবে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। এসএসকেএম-এর ঘটনায় অভিযুক্ত অতীতে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে অস্থায়ী কর্মী ছিলেন। সেই সূত্র ধরেই এসএসকেএমে যাতায়াত ছিল অভিযুক্তের। গত বুধবার নিজেকে ‘ডাক্তার’ বলে পরিচয় দিয়ে এসএসকেএম-এর বহির্বিভাগ থেকে নাবালিকাকে ভুলিয়েভালিয়ে হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারের শৌচাগারে নিয়ে যান বলে অভিযোগ। সেখানেই তাকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ।
সূত্রের খবর, এ অবস্থায় হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার জন্য চিকিৎসকদের পরিচয়পত্র (আইকার্ড) ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে রাজ্যের শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগ। হাসপাতালে তাঁদের ‘আইকার্ড’ যাচাই করার ব্যবস্থা থাকলে বাইরের কেউ বিনা অনুমতিতে হাসপাতাল চত্বরের যত্রতত্র প্রবেশ করতে পারবেন না বলে মনে করছে তারা। এ ছাড়া হাসপাতালের বিভিন্ন ভবনের প্রতিটি গেটে সমান ভাবে কড়া নজরদারির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। হাসপাতালের প্রতিটি ভবনে রোগীদের ব্যবহারের সামনের গেটে যতটা নিরাপত্তা রয়েছে, পিছনের দিকের গেটেও যাতে একই ধরনের নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়, সেই প্রস্তাবও দিয়েছেন শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগের প্রতিনিধিরা। এ ছাড়া পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য শৌচালয়গুলিকে চিহ্ন দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছে কমিশন। কোনও শৌচালয় নির্দিষ্ট ভাবে কারও ব্যবহারের জন্য থাকলে, সেটি অব্যবহৃত থাকাকালীন তালাবন্ধ করে রাখার কথাও বলা হয়েছে।
শনিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পরে প্রাথমিক স্তরে মৌখিক ভাবে এই প্রস্তাবগুলিই দিয়েছে কমিশন। পরবর্তী সময়ে লিখিত ভাবে পরামর্শাবলি জানানো হবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। রাজ্যের শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগের চেয়ারপার্সন তুলিকা বলেন, “আমরা সব দেখেছি। নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য আর কী করতে হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এসএসকেএম-এ যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলেও, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বলতে হচ্ছে, কোথাও একটি খামতি রয়েছে, যে কারণে এই ঘটনা ঘটে গিয়েছে। সেই ফাঁকগুলি চিহ্নিত করে সেগুলি ব্যবস্থা নিতে হবে।”