Kolkata

নিখোঁজ যুবকের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার আট দিন পরে

পরিবারের অভিযোগ, রাহুলের মুখে অ্যাসিড ঢেলে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে। তাদের দাবি, এই ঘটনায় জড়িত রাহুলেরই প্রতিবেশী এক বন্ধু। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২১ ০৭:০২
Share:

গোলমাল: রাহুল সাউয়ের (বাঁ দিকে) মৃত্যুতে জি টি রোড অবরোধ স্থানীয়দের। রবিবার, হাওড়ার গোলাবাড়ি এলাকায়। নিজস্ব চিত্র

আট দিন ধরে নিখোঁজ থাকা, হাওড়ার বাসিন্দা এক যুবকের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হল শনিবার রাতে, ডায়মন্ড হারবারের একটি পুকুর থেকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম রাহুল সাউ (২৪)। তাঁর বাড়ি হাওড়ার গোলাবাড়ির ওড়িয়াপাড়ায়। দেহ উদ্ধারের খবর পৌঁছতেই উত্তাল হয়ে ওঠে গোলাবাড়ি এলাকা। ওই যুবকের পরিজন ও এলাকার বাসিন্দারা দেহ নিয়ে রবিবার রাতে জি টি রোড অবরোধ করেন। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে চলে বিক্ষোভও। এ দিনই রাহুলের পরিবারের তরফে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। মৃতদেহ ময়না-তদন্তে পাঠিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

Advertisement

পরিবারের অভিযোগ, রাহুলের মুখে অ্যাসিড ঢেলে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে। তাদের দাবি, এই ঘটনায় জড়িত রাহুলেরই প্রতিবেশী এক বন্ধু।

তদন্তে জানা গিয়েছে, রাহুলের পরিবারের প্লাস্টিকের সামগ্রী তৈরির ব্যবসা। সম্প্রতি ওই যুবক একটি বেসরকারি মোবাইল পরিষেবা সংস্থায় কাজে যোগ দিয়েছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, গত ১২ তারিখ শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রতিদিনের মতোই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন রাহুল। তবে ১২ এবং ১৩ তারিখ তিনি ছুটিতে ছিলেন। ১২ তারিখ রাত ৯টা থেকে ওই পরিবারের এক মহিলার কাছে বার বার একটি ফোন আসতে থাকে। আতঙ্কিত এক তরুণী ফোনে জানতে চাইছিলেন, রাহুল ফিরেছেন কি না। রাহুলের পরিবারের দাবি, তরুণী তাঁর পরিচয় দেননি। কিন্তু তাঁকে উত্তেজিত ও আতঙ্কিত মনে হচ্ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ওই রাতে তরুণীর শেষ ফোন আসে ১১টায়।

Advertisement

রাহুলের দাদা চন্দ্রকুমার সাউ রবিবার বলেন, ‘‘ওই তরুণী কেন ফোন করেছিলেন জানি না। তবে আমরা তার পরেই পুলিশের কাছে নিখোঁজ ডায়েরি করি। শনিবার রাতে পুলিশ আমাদের খবর দেয়, ডায়মন্ড হারবারে একটি দেহ পাওয়া গিয়েছে। মৃতদেহের মুখ ক্ষতবিক্ষত। এর পরেই আমরা ভাইয়ের দেহ শনাক্ত করি।’’ এ দিন ওই যুবকের দেহ নিয়ে তাঁর বাড়ির কাছে ওড়িয়াপাড়ায় জি টি রোড অবরোধ করেন পরিজন ও এলাকাবাসী। তাঁদের অভিযোগ, আট দিন ধরে এক যুবক নিখোঁজ থাকা সত্ত্বেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।

রাহুলের বাবা ‌ভগৎ সাহু বলেন, ‘‘ওকে যাতে চিনতে না পারা যায়, তাই মুখে অ্যাসিড ঢেলে দেওয়া হয়েছে। পাশের বাড়িতে থাকা ওর এক বন্ধু এই খুন করেছে।’’

যে তরুণী বার বার রাহুলের খোঁজে ফোন করছিলেন, তাঁর খোঁজ শুরু হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, যুবকের নিখোঁজ হওয়ার পিছনে ওই তরুণীর কাছে গোপন তথ্য থাকতে পারে। রাহুলের সঙ্গে তরুণীর সম্পর্কও খতিয়ে দেখা হবে। ওই যুবক নিখোঁজ হওয়ার পরে রাজ্যের সমস্ত থানায় তাঁর ছবি পাঠানো হয়েছিল। সেই সূত্রেই শনিবার ডায়মন্ড হারবারের একটি পুকুর থেকে রাহুলের মতো দেখতে এক যুবকের দেহ উদ্ধারের খবর আসে।

হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘এই ঘটনায় প্রতিবেশী এক যুবকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতের পরিজনেরা। কিন্তু তদন্ত সম্পূর্ণ না করে কাউকে খুনি বলা যায় না। তাই তদন্তে উঠে আসা তথ্যের ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement