ডেঙ্গিতে তরুণীর মৃত্যু বিধাননগরে

মৃতার দাদা প্রদীপ দাস জানান, গত ৩১ অগস্ট তাঁর বোন জ্বরে আক্রান্ত হন। জ্বরের পাশাপাশি তাঁর শরীরে ছিল প্রবল যন্ত্রণা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:৪৫
Share:

মামণি দাস

ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল রাজারহাটের এক তরুণীর। শুক্রবার ভোরে, ই এম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। মৃতার নাম মামণি দাস (২৪)। এ বছর বিধাননগর পুর এলাকায় এই প্রথম ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হল। মামণি বিধাননগর পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের পার্থনগরীতে থাকতেন। তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন।

Advertisement

মৃতার দাদা প্রদীপ দাস জানান, গত ৩১ অগস্ট তাঁর বোন জ্বরে আক্রান্ত হন। জ্বরের পাশাপাশি তাঁর শরীরে ছিল প্রবল যন্ত্রণা। মামণিকে প্রথমে নারায়ণপুর মাতৃসদন ও পরে ভিআইপি রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ৩ সেপ্টেম্বর তাঁকে বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার ক্রমেই অবনতি হতে থাকে। প্লেটলেট নামতে থাকে দ্রুত। পরিবারের দাবি, চিকিৎসকেরা সমস্ত রকমের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শুক্রবার সকাল ৬টা ২০ মিনিটে মামণির মৃত্যু হয়। ডেথ সার্টিফিকেটে ‘এক্সপ্যান্ডেড ডেঙ্গি সিনড্রোম’-এর উল্লেখ রয়েছে বলে পরিবার সূত্রের দাবি।

মামণির বাড়িতে তাঁর বাবা, মা ও দুই দাদা রয়েছেন। বাবা পেশায় অ্যাপ-ক্যাব চালক। তাঁরা জানান, ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্যেরা পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁরাই চিকিৎসার অনেকটা ব্যয়ভার বহন করেছেন।

Advertisement

তবে তাঁদের অভিযোগ, স্থানীয় পুর প্রশাসনকে জানিয়েও লাভ হয়নি। মশাবাহিত রোগ দমনে এলাকায় সে ভাবে কাজ হয়নি বলেই দাবি ওই পরিবারের। যদিও মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায়ের দাবি, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়েই এলাকায় পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তিনি। প্রণয় জানান, এলাকায় স্বাস্থ্য-শিবির চালু করা হয়েছে। ওই এলাকায় রাস্তায় জল জমার সমস্যা নেই বলেই জানান তিনি। তবে বেশ কয়েকটি বাড়িতে জল জমিয়ে রাখার প্রবণতা দেখা গিয়েছে। সেখানে মশার লার্ভাও মিলেছে। তাই বাসিন্দাদের সচেতন করার ব্যাপারে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে।

সল্টলেকের দত্তাবাদেও দুই কিশোর জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। সেখানে নিকাশি নালার উপরে দোকান ও বাড়ি তৈরি হওয়ায় নালাটি অবরুদ্ধ হয়ে মশা জন্মাচ্ছে বলে খবর। স্থানীয় ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্মল দত্ত জানান, ওই দোকান ও বাড়ি তুলে দিতে পুরসভাকে জানানো হয়েছিল। পুরসভা নোটিস পাঠালেও সেগুলি ওঠেনি।

পুরসভা সূত্রের খবর, এ বছর অগস্ট পর্যন্ত ১০৩ জনের জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। তার মধ্যে অগস্টেই ৪০ জন জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই কারণে পুরসভা সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে মশাবাহিত রোগ দমনে বিশেষ জোর দিয়েছে। পুরসভার দাবি, গত কয়েক বছরের তুলনায় জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। যদিও তাতে মৃত্যু ঠেকানো গেল না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন