বাবার দেহ নিয়ে ঘরবন্দি যুবক, রহস্য

বাবার মৃতদেহ নিয়েই ছেলে বাড়িতে ছিলেন বলে পুলিশ জানায়। মৃতদেহের মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে বলেও পুলিশ জানায়। পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:১৪
Share:

জীবনকুমার চট্টোপাধ্যায়

বাড়ি থেকে উদ্ধার হল এক বৃদ্ধের দেহ। তিনি খুন হয়েছেন সন্দেহে তাঁর বড় ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ। তবে মানসিক সমস্যা রয়েছে দাবি করে বৃদ্ধের বড় ছেলেকে হাসপাতালেও ভর্তি করেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, প্রাথমিক ভাবে তাঁদের অনুমান, বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে এক থেকে দু’দিন আগেই। কিন্তু বাবার মৃত্যুর কথা ছেলে কাউকে জানাননি। বৃহস্পতিবার পচন ধরা অবস্থায় বৃদ্ধের দেহ বন্ধ ঘর থেকেই উদ্ধার হয়।

Advertisement

বাবার মৃতদেহ নিয়েই ছেলে বাড়িতে ছিলেন বলে পুলিশ জানায়। মৃতদেহের মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে বলেও পুলিশ জানায়। পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে।

তদন্তকারীরা জানান, বৃহস্পতিবার বারাসতের রথতলা এলাকায় জীবনকুমার চট্টোপাধ্যায় (৭৫) নামে ওই বৃদ্ধের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর বড় ছেলে সৌরভকে আটক করে পুলিশ বারাসত জেলা হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগে ভর্তি করেছে। সৌরভের মানসিক সমস্যা রয়েছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। জীবনবাবুর দেহ তাঁর প্রতিবেশীরাই উদ্ধার করে পুলিশকে খবর দেন। তদন্তকারীরা জানান, বৃদ্ধের মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তিনি খুন হয়েছেন বলেই প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন তদন্তকারীরা। তেমনই ধারণা তাঁর প্রতিবেশীদেরও।

Advertisement

জীবনবাবু বারাসত পুরসভার ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের রথতলা ব্যাঙ্ক কলোনির বাসিন্দা। বিপত্নীক জীবনবাবু বড় ছেলে বছর চল্লিশের সৌরভের সঙ্গে থাকতেন। তাঁর ছোট ছেলে কর্মসূত্রে চেন্নাইতে থাকেন। পুলিশ তাঁকে খবর দিয়েছে।

এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মানসিক সমস্যার কারণে সৌরভ আগেও হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তিনি পুরোপুরি সুস্থ নন। জীবনবাবুকে মারধরও করতেন বলে স্থানীয়দের দাবি। ফলত রাগের মাথায় সৌরভই তাঁর বাবার মাথায় আঘাত করেছেন কি না, খতিয়ে দেখতে চাইছে পুলিশ।

প্রতিবেশীরা জানান, জীবনবাবু নিয়মিত তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। চায়ের দোকানে আড্ডা দিতেন। সৌরভকে নিয়ে নিজের অসহায়তার কথাও জানাতেন। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে জীবনবাবুকে বাড়ির বাইরে কোথাও দেখা যাচ্ছিল না। মোবাইল ফোনেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে সৌরভকে মাঝেমধ্যে বাড়ির বাইরে দেখা গেছে। কিন্তু তাঁর কাছে জীবনবাবুর বিষয়ে জানতে চাওয়া হলেও তিনি কিছু জানাননি।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে পাড়ার কয়েক জন বাসিন্দা জীবনবাবুর বাড়িতে যান। সৌরভই ঘরের দরজা খুলে দেন। তাঁর কাছে জীবনবাবুর খবর জানতে চাইলে তিনি পড়শিদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। পড়শিরা প্রায় জোর করে বাড়ির ভিতরে ঢুকে ঘরের মেঝেতে জীবনবাবুর নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তাঁরাই সৌরভকে আটকে পুলিশে খবর দেন।

পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠায়। সৌরভের মানসিক অবস্থা জানতে ডাক্তারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে পুলিশ। তাঁদেরর থেকে সবুজ সঙ্কেত পেলেই সৌরভের সঙ্গে কথা বলবে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন