পাঁচ বছরেও অসমাপ্ত পড়ে দেশবন্ধু পার্ক সুইমিং পুল

কথা ছিল ১৮ মাসে শেষ হবে। ৫৬ মাস পেরিয়েও উত্তর কলকাতার দেশবন্ধু পার্কের সুইমিং পুলের কাজ শেষ হয়নি। যদিও কলকাতা পুরসভার উদ্যান দফতর সূত্রে খবর, অর্থের কোনও সমস্যা নেই। পদ্ধতিগত কিছু পরিবর্তনের জন্যই এই দেরি হচ্ছে। উত্তর কলকাতার রাজা দীনেন্দ্র স্ট্রিটের প্রায় ৫৪ বিঘা জমি জুড়ে রয়েছে এই দেশবন্ধু পার্ক।

Advertisement

জয়তী রাহা

শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:০০
Share:

এই সেই সুইমিং পুল। —নিজস্ব চিত্র

কথা ছিল ১৮ মাসে শেষ হবে। ৫৬ মাস পেরিয়েও উত্তর কলকাতার দেশবন্ধু পার্কের সুইমিং পুলের কাজ শেষ হয়নি। যদিও কলকাতা পুরসভার উদ্যান দফতর সূত্রে খবর, অর্থের কোনও সমস্যা নেই। পদ্ধতিগত কিছু পরিবর্তনের জন্যই এই দেরি হচ্ছে।

Advertisement

উত্তর কলকাতার রাজা দীনেন্দ্র স্ট্রিটের প্রায় ৫৪ বিঘা জমি জুড়ে রয়েছে এই দেশবন্ধু পার্ক। এই পার্কে প্রায় ১০ বিঘার উপরে একটি পুকুর ছিল। সেখানেই স্থানীয় তিনটি ক্লাব সাঁতার শেখাত। পূর্বতন বামবোর্ডের সময়ে সিদ্ধান্ত হয়, পুকুরের জায়গায় তৈরি হবে উন্নতমানের আধুনিক সুইমিং পুল। তৃণমূল পুরবোর্ড গঠনের পরে তৎপর হয়েছিল কলকাতা পুরসভার উদ্যান বিভাগ। ২০১০-এর মার্চ মাসে কাজ শুরু হয়। পরিকল্পনা ছিল, প্রায় সাড়ে ছ’কোটি টাকা ব্যয়ে দেড় বছরে শেষ করতে হবে কাজ। এই কাজে কেএমডিএ, স্থানীয় বিধায়ক সাধন পাণ্ডের বিধায়ক তহবিল, পুরসভা এবং রাজ্য সরকার অর্থ সাহায্য করে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৫ মিটার লম্বা এবং ১০ মিটার চওড়া তিনটি ছোটদের পুল ও ২৫ মিটার লম্বা এবং ১৫ মিটার চওড়া প্রশিক্ষণের পুল তৈরির কাজ শেষ। ৫০ মিটার লম্বা ২৫ মিটার চওড়া প্রধান পুলটির কাজ এখনও শেষ হয়নি। দ্বিতীয় পর্যায়ে ডাইভিং বোর্ড, প্র্যাক্টিস বোর্ড, জিমন্যাসিয়াম, গ্যালারি এবং আরও দু’টি পুল হওয়ার কথা ছিল। প্রথম পর্যায়েরই কাজ শেষ হয়নি। ফলে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ হচ্ছে না এখনই।

Advertisement

২০০৭ থেকে সাত বছরের বৈদেহী বসু স্থানীয় এই পার্কে নিয়মিত সাঁতার শিখতে আসত। ২০১০-এ সুইমিং পুলের কাজ শুরু হওয়ায় আপাতত সাঁতারও বন্ধ তার। ছোটদের তিনটি পুলের দায়িত্বে তিনটি স্থানীয় ক্লাব। তাদেরই একটির সদস্য শিবব্রত ভট্টাচার্য বলেন, “প্রকল্প সময়ে শেষ না হওয়ায় ক্লাব ও ছোট সাঁতারুদের যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে। জোর করেই গত বার ছোটদের পুল তিনটিতে সাঁতার প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। কাজ শেষ না হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে।”

এই মুহূর্তে রক্ষণাবেক্ষণহীন ভাবে পড়ে রয়েছে প্রধান পুল-সহ পাঁচটি পুল। সবচেয়ে বড় পুলটি অসম্পূর্ণই পড়ে। টালি লাগানোর কাজই এখনও হয়নি। পাথওয়ে তৈরি হলেও বসেনি আলোকস্তম্ভ। আগাছা আর আবর্জনায় ভরে রয়েছে চত্বর। তবে দু’দিকের ফেন্সিং-এর কাজ শেষ হলেও বাকি রয়েছে আরও দু’দিক।

পুরসভার উদ্যান বিভাগের মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, “এক কোটির কিছু বেশি টাকার কাজ এখনও বাকি রয়েছে। টাকার কোনও অভাব নেই। সমস্যা হয়েছে ‘নেচার অফ ওয়ার্ক চেঞ্জ’ হওয়ায়। অর্থাৎ যখন প্রকল্প হয়েছিল তখন সুইমিং পুলের মেঝে মোজেক হওয়ার কথা ছিল। পরে সাঁতারের অত্যাধুনিক নিয়ম মেনে টাইলস বসানোর প্রস্তাব আসে। তখন আবার নতুন করে টেন্ডার ডাকা হয়। তাই এত দেরি।” তিনি আরও জানান, দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ এখনই শুরু হবে না। টাকার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ের কাজ এপ্রিলের মধ্যে শেষ হবে বলে দাবি তাঁর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন