তাঁরা মুম্বইয়ের বাসিন্দা। সেখানকার কর্পোরেশন ব্যাঙ্ক থেকে ২০০৯-এ প্রায় ১৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। তা ফেরত না দিয়েই পালিয়ে যান পরিবারের তিন জন।
পাঁচ বছর পরে কলকাতা বিমানবন্দরে ধরা পড়ে গেলেন সকলে। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম অমিত সরকার, তাঁর স্ত্রী মিতা সরকার ও মা মীরা সরকার। মঙ্গলবার মুম্বই পুলিশ অভিযুক্তদের ব্যারাকপুর আদালতে পেশ করার পরে মুম্বই নিয়ে যায়।
বিমানবন্দর সূত্রে খবর, সোমবার সন্ধ্যায় এমিরেটস-এর বিমানে দুবাই থেকে কলকাতা আসেন ওই তিন যাত্রী। অভিবাসন অফিসারেরা তাঁদের পাসপোর্ট পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখেন, তিন জনের বিরুদ্ধেই সতর্কবার্তা রয়েছে। তিন জনকে আটক করা হয়। কিন্তু সহজে ধরা দিতে চাননি অমিতরা। তাঁরা পাল্টা চ্যালেঞ্জ করে বলেন, “সতর্কবার্তা থাকলেই তো হবে না। আমাদের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ রয়েছে?” রাতে তাঁদের বিমানবন্দর থানায় পাঠানো হয়। সেখানেও পুলিশকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেন অমিত। বিপাকে পড়ে যায় পুলিশ। কারণ শুধু ওই সতর্কবার্তা ছিল হাতিয়ার। কী ধরনের অপরাধের জন্য সেই সতর্কবার্তা, তার উল্লেখ ছিল না। বলা ছিল জালিয়াতির অভিযোগে মুম্বই সিবিআইয়ের একটি শাখার অফিসারেরা তাঁদের খুঁজছে। এক সিবিআই অফিসারের একটি ফোন নম্বর ছিল। তাঁকে ফোন করে জানা যায় ব্যাঙ্ক জালিয়াতির কথা। জানা যায়, মুম্বইয়ের ওই ব্যাঙ্ক জালিয়াতির মামলা সিবিআই হাতে নেয় এ বছর জুনে। তার পরেই ওই তিন জনের নামে দেশের সব বিমানবন্দরে সতর্কবার্তা জারি করা হয়। যাতে তাঁরা দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন। অথবা বিদেশে চলে গেলে দেশে ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই যাতে ধরা পড়ে যান।
সিবিআই-এর সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ জানতে পারে, ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়ার সময়ে যে নথি অমিতরা জমা দেন, ব্যাঙ্কের অভিযোগ তা সমস্তই জাল। তা ছাড়া, টাকা ফেরতও দেননি তাঁরা। এই সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র রাতে মুম্বই থেকে ফ্যাক্সে থানায় পাঠিয়ে দেয় সিবিআই। যার ভিত্তিতে মঙ্গলবার সকালে আদালতে তোলা হয় ওই তিন জনকে।
পুলিশ জানিয়েছে, অমিত পেশায় ব্যবসায়ী। জানান, তাঁরা দুবাই বেড়াতে গিয়েছিলেন। বারাসতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাবেন বলে কলকাতায় এসেছেন। পরে সেই আত্মীয় থানায় আসেন। প্রাথমিক তদন্তে অমিতের মা মীরাদেবীর ভিসা খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে, ওই ভিসায় ইউরোপের ২৫টি দেশে ভ্রমণ করা যায়।