দমদম স্টেশনের উপর দিয়ে গিয়েছে মেট্রো। পাশাপাশি রয়েছে পূর্ব রেলের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা (মেন লাইন, বনগাঁ ও ডানকুনি)। নিত্য দিন মেট্রো ও পূর্ব রেল মিলিয়ে দমদম স্টেশন দিয়ে প্রায় ১০-১২ লক্ষের মতো যাত্রী যাতায়াত করেন। অথচ স্টেশনে আসা-যাওয়ার পথ মাত্র দু’টি। একটি চার নম্বর, অন্যটি এক নম্বর প্ল্যাটফর্ম দিয়ে। এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের রাস্তা পুরোটাই কার্যত হকারদের দখলে। ফলে অফিসের ব্যস্ত সময়ে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে নাজেহাল হচ্ছেন যাত্রীরা। অথচ পূর্ব ও মেট্রো এই দুই রেল জোনের কর্তাদের তা নিয়ে কোনও হেলদোল নেই।
সকাল সন্ধ্যায় প্রতি দিনই দমদম স্টেশনে মেট্রো থেকে নামা-ওঠা করছেন হাজার হাজার যাত্রী। অন্য দিকে রয়েছেন লোকাল ট্রেনের যাত্রীরাও। কেউ বা ছুটছেন বাস ধরার জন্য। কেউ আবার অটোতে ওঠার জন্য। এর মধ্যেই উল্টো দিক থেকে কাতারে কাতারে যাত্রী আসছেন ট্রেন ধরার জন্য। কম-বেশি শারীরিক কসরত করেই সবাইকে এগোতে হচ্ছে। কারণ, একটু এ দিক-ও দিক হলেই মুখোমুখি ধাক্কা। কারওর বা পাশাপাশি।
এমনিতেই এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের রাস্তাটি সরু। তার আবার বেশির ভাগটাই হকারদের দখলে। সব মিলিয়ে যাত্রীদের দমদমে পৌঁছতে বা স্টেশন থেকে বেরোতে চূড়ান্ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোজই। এ নিয়ে যাত্রীরা বারবার রেল কর্তৃপক্ষের কাছে দরবার করেছেন। যাত্রীদের হয়ে দরবার করা হয়েছে দমদম প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের তরফেও। কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ, কোনও লাভ হয়নি।
যাত্রীদের বক্তব্য, এই চত্বরে আর কোনও জায়গা নেই। ফলে কোনও ভাবেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। যদিও এই সমস্যার সমাধানের উদ্দেশ্যে দমদম ইস্টানর্র্ ও মেট্রো রেল প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে একটি বিকল্প পথের সন্ধান দেওয়া হয়েছিল। ওই বিকল্প রাস্তা পূর্ব রেলের ইঞ্জিনিয়ারেরা অনেক বার দেখেও গিয়েছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করা হয়নি বলে অভিযোগ সংগঠনের সম্পাদক সুজিতকুমার সধ্যার।
কী সেই বিকল্প পথ? সংগঠনের দাবি, দমদমের উত্তর কেবিনের নীচ দিয়ে আন্ডারপাস করে সেটিকে কালীবাড়ি রোড, পূর্ব সিঁথি রোড হয়ে বাগজোলা খাল পেরিয়ে দমদম রোডে মিশিয়ে দিতে হবে। এ ছাড়া আর কোনও পথ নেই রেলের কাছে। রেলের তরফে অবশ্য প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের দেওয়া বিকল্প রাস্তার প্রস্তাবের কথা স্বীকার করা হলেও সেটি কতটা গ্রহণযোগ্য, সে ব্যাপারে রেলকর্তারা কোনও মন্তব্য করেননি।
এ দিকে, বছর তিনেক আগে দমদম স্টেশনে ভিড় কমাতে মেট্রোর তরফে বলা হয়েছিল, দমদম স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের উল্টো দিকে পূর্ব রেলের জমিতে টিকিট কাউন্টারটি সরিয়ে নেওয়া হবে। কিন্তু সেই কাজও হয়নি। উল্টে দিনের পর দিন যাত্রী বেড়েই চলেছে। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে দুর্ভোগও। মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র অবশ্য বলেছেন, “বিষয়টি মেট্রোর নজরে রয়েছে। কী ভাবে সুরাহা করা যায়, তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনাও চলছে।”