ভাঙা ঘরে কুশমণ্ডিতে নাতনির অপেক্ষায় দিনযাপন

বা়ড়ির মেয়েটির জীবনে চরম দুর্যোগ ঘনিয়ে আসার পর কেটে গিয়েছে দু’মাস। আজও ভিক্ষে করে কোনওমতে পেট চলছে কুশমণ্ডির নির্যাতিতার একমাত্র অভিভাবক তার দাদু দিদার।

Advertisement

নীহার বিশ্বাস

বুনিয়াদপুর শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৮ ০২:২৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

আশ্বাস মিলেছে অনেক। কিন্তু কথা রাখেনি কেউ।

Advertisement

বা়ড়ির মেয়েটির জীবনে চরম দুর্যোগ ঘনিয়ে আসার পর কেটে গিয়েছে দু’মাস। আজও ভিক্ষে করে কোনওমতে পেট চলছে কুশমণ্ডির নির্যাতিতার একমাত্র অভিভাবক তার দাদু দিদার।

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধেয় ইটাহারের শিবরাত্রির মেলায় গণধর্ষণের শিকার হয় কুশমণ্ডির ওই যুবতী। তাঁর যৌনাঙ্গে ধাতব কিছু ঢুকিয়ে দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। অমানুষিক নির্যাতনের সেই ঘটনা জানাজানি হতেই তোলপাড় পড়ে রাজ্যজুড়ে। তার পরে নির্যাতিতার পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় নেতারা। সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীও। কিন্তু এখন কেউ আর তাঁদের খোঁজ নেয় না বলে জানিয়েছেন পড়শিরা। এখন ভেঙে পড়া় মাটির ঘরের দাওয়ায় বসে অসুস্থ এই দুই ষাটোর্ধ বৃদ্ধ-বৃদ্ধা নাতনির ঘরে ফেরার আশায় দিন গুনছেন। শীর্ণ গলায় তাঁরা বললেন, ‘‘ঘটনার পরের দিন এক সাহেব এসেছিল। বলেছিল সরকার সাহায্য করবে। মেয়েকে বাড়ি ফিরিয়ে দেবে। ভাঙা ঘরের বদলে নতুন ঘর পাবো। আমাদের বৃদ্ধ ভাতা হবে। কিন্তু কোথায় সেই সব।’’

Advertisement

যে জায়গায় সেই ঘটনাটি ঘটেছিলো, তার পাশেই নির্যাতিতার দাদুর বাড়ি। নিজের ঘরবাড়ি না থাকায় দাদুর বাড়িতেই থাকত ওই তরুণী। কুশমণ্ডির জয়েন্ট বিডিও ঘটনার পরের দিন এসে পরিবারকে আশ্বাস দিয়েছিলে দ্রুত তাদের নতুন ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে। দুই বৃদ্ধ-বৃদ্ধার বার্ধক্য ভাতার ব্যবস্থা করা হবে। তবে কোনও প্রতিশ্রুতিই পূরণ হয়নি। এমনকি নির্যাতিতার যে জমি রয়েছে তা উদ্ধার করার কাজও এগোয়নি। আদিবাসী জমি রক্ষা কমিটির ইটাহার ব্লক সভাপতি মার্কস মার্ডি বলেন, ‘‘মেয়েটির নিজের কোনও ভোটারকার্ড, আধারকার্ড নেই। শুনেছি সরকার টাকা দিয়েছে। সেই টাকা দিয়ে মেয়েটির কী কাজ হচ্ছে আমরা দেখতে পাচ্ছি না।’’

কুশমণ্ডির বিডিও অমূল্য সরকার বলেন, ‘‘মেয়েটির কোনও কাগজপত্র নেই। একটা অ্যাকাউন্ট খুলে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো টাকা রাখা হয়েছে। গীতাঞ্জলির ঘর দেওয়ারও উদ্যোগ নিয়েছি। তাঁদের যা প্রয়োজন হবে প্রশাসন সাহায্য করবে। নির্যাতিতার জমি উদ্ধারের জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, গ্রেফতার হওয়া দুই ব্যক্তিই অভিযোগ স্বীকার করেছে। তারা এখন জেলে রয়েছে। আগামী ১ মে অভিযুক্তদের ফের আদালতে তোলা হবে। যদিও চার্জশিট এখনও তৈরি হয়নি। মহকুমা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘মেয়েটিকেই সুস্থ করে বাড়ি ফেরানোই এখন লক্ষ্য। চার্জশিট সময়েই পেশ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন