greater Coochbehar

বংশীবিদ্ধ ‘দাদা-দিদি’

তিনি আরও বলেন, “আমাদের কথা কেউ ভাবে না। ভূমিপুত্রের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হবে। দাদা-দিদিকে আমরা চিনি না। আমাদের ভাল আমরা নিজেরাই করব। ২০২১ সালে আমরা দাদা-দিদির হুঁশ হারিয়ে দেব।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২০ ০৫:৩০
Share:

মঞ্চে: বংশীবদন। নিজস্ব চিত্র

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতা করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিলেন গ্রেটার নেতা বংশীবদন বর্মণ। তবে রেয়াত করলেন না রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেও। তাঁর বক্তব্য, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ‘দাদা-দিদির হুঁশ হারিয়ে’ দেবেন তাঁরা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার কোচবিহারের রাসমেলার মাঠে ভূমিপুত্র ঐক্য মঞ্চের সভায় বংশীবদন বলেন, “সম্প্রীতির মাটিতে ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন মানা হবে না। আমরা দাদা-দিদি কোনও পক্ষেই নেই। আমরা আমাদের অস্তিত্বের পক্ষে আছি। ভারত-ভুক্তি চুক্তি অনুযায়ী কোচবিহারের মানুষের মতামত না নিয়ে এখানে কোনও আইন চালু হতে পারে না।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের কথা কেউ ভাবে না। ভূমিপুত্রের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হবে। দাদা-দিদিকে আমরা চিনি না। আমাদের ভাল আমরা নিজেরাই করব। ২০২১ সালে আমরা দাদা-দিদির হুঁশ হারিয়ে দেব।” তিনি আরও বলেন, “দাদা (নরেন্দ্র মোদী) সিএএ-এনআরসির পক্ষে। কারণ তাঁর হিন্দু ভোট লাগে। আর দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধায়) দু’টিরই বিপক্ষে। কারণ দিদির মুসলিম ভোটও লাগে। আমরা এর মধ্যে নেই। আমাদের আন্দোলনে ভূমিকম্প তুলতে হবে।”
মঞ্চে হাজির ছিলেন কেপিপি নেতা অতুল রায়। তিনি বলেন, “উত্তর-পূর্ব ভারতের ছ’টি রাজ্যের ভূমিপুত্রদের জন্য রক্ষাকবচ দেওয়া হয়েছে। অথচ আমাদের কোনও রক্ষাকবচ নেই। এটা কোনও ভাবেই মানা হবে না।”

কিছুদিন আগেই নিজেদের অধিকারের দাবিতে আন্দোলন জোরদার করতে ভূমিপুত্র ঐক্যমঞ্চ তৈরি করে। ওই মঞ্চের চেয়ারম্যান বংশীবদন এবং ভাইস চেয়ারম্যান অতুল। সিএএ পাশ হতেই আন্দোলনে নামেন তাঁরা। সেই সঙ্গেই এনআরসির পক্ষে সওয়াল করেন তাঁরা। এ দিন তাঁদের বক্তব্য, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে বাংলাদেশ বা বাইরের দেশ থেকে আসা হিন্দুরা নাগরিকত্ব পাবেন। সেক্ষেত্রে কোচবিহারে বা উত্তরবঙ্গে তাঁদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে। এনআরসি’র ক্ষেত্রে তাঁদের যুক্তি, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চকে ভিত্তিবর্ষ ধরে এনআরসি করতে হবে। সেক্ষেত্রে বাইরের থেকে আসা মানুষের হিসেব স্পষ্ট হবে। তাঁদের অধিকার সুনিশ্চিত হবে। রাজনৈতিক অভিজ্ঞদের বক্তব্য, বিধানসভা ভোটের আগে বংশী-অতুল নিজেদের সংগঠন এ ভাবেই শক্তিশালী করতে চাইছেন।

Advertisement

বিজেপি অবশ্য বংশীবদনকে তৃণমূলের লোক বলেই চিহ্নিত করেছে। বংশীবদন রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমি এবং রাজবংশী উন্নয়ন পর্ষদের দায়িত্বে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি মালতী রাভা। তিনি বলেন, “বংশীবদন কে? রাজ্য আটকাতে পারবে না। আইন চালু হবেই। বংশীবদনকে নিয়ে আমরা ভাবি না। আর বংশীবদন তৃণমূলের কথায় চলছে, তা সবাই জানে।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলার কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “সিএএ এবং এনআরসি’র বিরুদ্ধে আমরা। ভূমিপুত্রদের অনেকেরই কাগজ নেই, এনআরসি হলেন তারা বিপদে পড়বেন। অসমে আমরা তা দেখেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন