শুক্রবার মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলপ্রকাশিত হয়েছে। —ফাইল চিত্র।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘‘মাধ্যমিক পরীক্ষা ২০২৫-এর ফল প্রকাশিত হল। পাশের হার ৮৬.৫৬ শতাংশ। সফল ছাত্রছাত্রীদের প্রতি রইল আমার আন্তরিক অভিনন্দন। আশা করব, তোমরা জীবনের সব ক্ষেত্রে সফল হবে, বাংলার মুখ উজ্জ্বল করবে এবং ভবিষ্যতে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখবে।’’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাধ্যমিকে উত্তীর্ণদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সকল ছাত্রছাত্রীকে জানাই আমার আন্তরিক অভিনন্দন! আগামী দিনে তোমরা আরও সফল হবে, এই প্রত্যাশা রাখি। তোমাদের জীবনের এই স্মরণীয় দিনে আমি তোমাদের বাবা-মা, অভিভাবক-অভিভাবিকা এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। তাঁদের সমর্থন ও পথনির্দেশই তোমাদের এই সাফল্যকে সম্ভব করে তুলেছে।’’ অনুত্তীর্ণদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, ‘‘যারা আজ ভাল ফল করতে পারোনি তাদের বলব, হতাশ হয়ো না। চেষ্টা করো। আগামী দিনে সাফল্য আসবেই।’’
পর্ষদের পরিসংখ্যান বলছে, ১ লক্ষ ২২ হাজার ৭৯৫ জন মাধ্যমিকে এ বছর পাশ করতে পারেনি। পরের বছরের পরীক্ষায় তাদের সাফল্য কামনা করেছেন পর্ষদ সভাপতি।
পর্ষদ জানিয়েছে, এ বছর মাধ্যমিকের পাশের হার সর্বকালের সেরা— ৮৬.৫৬ শতাংশ।
মাধ্যমিকের ষষ্ঠ স্থানে এ বছর রয়েছে পাঁচ জন, সপ্তম স্থানে রয়েছে পাঁচ জন, অষ্টম স্থানে কলকাতার ওই ছাত্রী-সহ রয়েছে মোট ১৬ জন। এ ছাড়া, নবম স্থানে ১৪ জন এবং দশম স্থানে ১৬ জন পরীক্ষার্থীর নাম রয়েছে।
এ বছরও মাধ্যমিকে রয়েছে গ্রেড ব্যবস্থা। সর্বোচ্চ ‘এএ’ গ্রেড পেয়েছে ১০,৬৫৯ জন। ‘এ+’ গ্রেড পেয়েছে ২৫,৮২০ জন এবং ‘এ’ গ্রেড পেয়েছে ৯১,২৩৭ জন।
প্রথম দশ জনের মেধাতালিকায় মোট ৬৬ জন রয়েছে। তাদের মধ্যে এক জন কলকাতার। বাগবাজারের রামকৃষ্ণ সারদা মিশন সিস্টার নিবেদিতা গার্লস স্কুলের ছাত্রী অবন্তিকা রায় অষ্টম স্থান অধিকার করেছে। সে পেয়েছে ৬৮৮।
মাধ্যমিকের সম্পূর্ণ মেধাতালিকা রইল এই লিঙ্কে।
এ বছর মাধ্যমিকে পঞ্চম হয়েছে চার জন। তাদের মধ্যে হুগলি থেকেই রয়েছে তিন জন— সিঞ্চন নন্দী, মহম্মদ আসিফ এবং দীপ্তজিৎ ঘোষ। এ ছাড়া দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোমতীর্থ করণও পঞ্চম হয়েছে। তাদের প্রাপ্ত নম্বর ৬৯১।
মাধ্যমিকে এ বছর চতুর্থ স্থানে রয়েছে দু’জন। পূর্ব বর্ধমানের মহম্মদ সেলিম এবং পূর্ব মেদিনীপুরের সুপ্রতীক মান্নার প্রাপ্ত নম্বর ৬৯২।
মাধ্যমিকে তৃতীয় স্থানে বাঁকুড়ার ঈশানী চক্রবর্তী। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৩।
মালদহের অনুভব মাধ্যমিকে দ্বিতীয়। সে চিকিৎসক হতে চায়। গোয়েন্দা গল্প পড়তে ভালবাসে। আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গ বোর্ড ছাড়তে চায় অনুভব। দিল্লি বোর্ডে পড়াশোনা করবে বলে জানিয়েছে।
এ বছর মাধ্যমিকে দ্বিতীয় স্থানে আছে দু’জন। মালদহের রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের অনুভব বিশ্বাস (৬৯৪) এবং বাঁকুড়া বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের সৌম্য পাল (৬৯৪)।
প্রথম হয়েছে রায়গঞ্জের আদৃত সরকার। সে পেয়েছে ৬৯৬।
পর্ষদ সভাপতি জানিয়েছেন, এ বছর মাধ্যমে প্রথম দশে আছে ৬৬ জন। তবে প্রথম হয়েছে এক জনই।
গত বারের তুলনায় পাশের হার সামান্য বেড়েছে। এ বছর মাধ্যমিকে পাশের হার ৮৬.৫৬ শতাংশ। গত বার ছিল ৮৬.৩১ শতাংশ।
মাধ্যমিকে পাশের হারে শীর্ষে পূর্ব মেদিনীপুর। তার পর যথাক্রমে কালিম্পং, কলকাতা এবং পশ্চিম মেদিনীপুর রয়েছে।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় মাধ্যমিকের ফল ঘোষণা করছেন। তাঁর সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত আছেন পর্ষদ সচিব।
সকাল ৯টায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে সাংবাদিক বৈঠক শুরু হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হচ্ছে এই বৈঠকে। পরে সম্পূর্ণ ফলাফল ওয়েবসাইটে আপলোড করা হবে।
গত বছরের মতো চলতি বছরেও মোবাইল বা ইলেকট্রনিক গ্যাজেট নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। পরীক্ষা চলাকালীন কেউ মোবাইল সমেত ধরা পড়লে পরীক্ষা বাতিল হবে। ২০২৪-এ মোট ১৪৫ জনের পরীক্ষা বাতিল হয়েছিল। চলতি বছরে সেই সংখ্যা কমে হয়েছে ১৯ জন, যাদের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।