মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খবর পেলাম, পাড়ার একটি বাড়ির মালিক হেরোইন বিক্রি করছে। পাঁচ-ছ’জন মহিলাকে নিয়ে সেখানে গিয়ে হাতেনাতে ধরে ফেলি। শুরু হয় আমাদের সঙ্গে তর্কাতর্কি। গালিগালাজ করা হয়। আমাদের শাবল, ইট দিয়ে মারধর করা হয়। এক মহিলা আমার কানের দুলের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে টান দিলে কান ছিঁড়ে রক্ত বের হতে থাকে। আসুরা নামে এক মহিলাকেও মুখে আঘাত করা হয়েছে। তার ও আমার চারটি করে সেলাই পড়েছে। সোনার গয়না ওরা ছিনিয়ে নিয়েছে।
কিন্তু হেরোইনের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ চলবেই। আমার বয়স আটচল্লিশ বছর। স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দফতরির কাজ করি। প্রায় ৪০ বছর ধরে জয়পুরে আছি। স্বামী মারা গিয়েছেন প্রায় সতেরো বছর আগে। ছেলে, বৌমা, নাতনিকে নিয়ে সংসার। মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বছর কুড়ি আগে আমরা দেখলাম, এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে হেরোইন বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে যুবকেরা ধীরে ধীরে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। পুরুষরা বাড়ি ফিরে অশান্তি করছে। তাদের আয়ের বড় অংশ চলে যাচ্ছে নেশা করতে। বাইরে থেকে নেশাসক্তদের আনাগোনা গ্রামে বেড়ে গিয়েছিল। এলাকার সামাজিক পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। সে সব দেখে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারিনি। নানা আন্দোলন করে মাঝে হেরোইনের ব্যবসা কমেছিল। কিন্তু কিছু দিন ধরে একটি পরিবার ফের হেরোইন বিক্রি শুরু করে। প্রতিবাদ করি। আমি বা আমরা যে আন্দোলন শুরু করেছি, সেখান থেকে কিছুতেই সরে আসব না। যতই হুমকি আসুক, আমাদের লড়াই চলবেই।