রাজ্যে আসতে পারে ৬০০ কোম্পানির কেন্দ্রীয় বাহিনী। ফাইল চিত্র।
আসনের বিচারে পশ্চিমবঙ্গ অনেকটাই পিছিয়ে উত্তরপ্রদেশের তুলনায়। প্রায় অর্ধেক। মধ্যপ্রদেশের তুলনাতেও এ রাজ্যে লোকসভা আসনের সংখ্যা কয়েকটা কম। কিন্তু এই দুই রাজ্যের থেকে পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচনের বাজারে অন্য একটা দিকে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। কমিশনের হিসাব বলছে, অভিযোগের নিরিখে অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় কয়েকশো কদম এগিয়ে পশ্চিমবঙ্গ। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখেই এখানে তুলনামূলক ভাবে বেশি সংখ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হতে পারে বলে কমিশন সূত্রে খবর।
আগামী ১১ এপ্রিল এ রাজ্যে প্রথম দফার নির্বাচন। ভোট শুরুর আগে ইতিমধ্যেই এ রাজ্যে ১০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চলে এসেছে। কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলায় চলছে বাহিনীর রুট মার্চ। কয়েক দিনের মধ্যে আরও ৪০-৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে বলে কমিশনের একটি সূত্র জানাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত সংখ্যাটা ৬০০-র ঘরে পৌঁছতে পারে বলে জানিয়েছে ওই সূত্রটি। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর সূত্রে খবর, প্রতিটি বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে।
নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর পরই শাসকদল তৃণমূল প্রশ্ন তোলে, মহারাষ্ট্রে এত আসন থাকা সত্ত্বেও সেখানে চার দফায় নির্বচন, আর পশ্চিমবঙ্গে সাত? রুট মার্চের সময়ে রাজ্যে আসা কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভোটারদের সঙ্গে কথা বলা নিয়েও আপত্তি তোলে তারা। ‘অতি সক্রিয়তার’ অভিযোগ নিয়ে তৃণমূল কমিশনের দ্বারস্থ হতে পারে বলেও দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। অথচ শাসক দলের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই বিরোধী দলগুলি কমিশনে গিয়েছে একাধিক বার। বিরোধী বিজেপি, কংগ্রেস, বামেরা সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পাশাপাশি সেগুলোকে স্পর্শকাতর ঘোষণার দাবি জানিয়ে এসেছে। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ভূরি ভূরি অভিযোগ জমা পড়েছে বলেও কমিশনের ওই সূত্রটি জানাচ্ছে।
আরও পড়ুন: আজ প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করতে পারে বিজেপি, রাজ্যে কে কোথায় প্রার্থী, জল্পনা তুঙ্গে
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
গত শনিবারই রাজ্যে এসেছিলেন উপ নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন। তিনি রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে কথাও বলেন। সব অভিযোগ খতিয়ে দেখেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা বাড়ানো হবে। সাত দফা ভোটে এ রাজ্যে কত কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ করা হবে? এ নিয়ে কমিশন এখনও কোনও ঘোষণা করেনি। তবে ওই সূত্রটি জানাচ্ছে, সংখ্যাটা ৬০০ কোম্পানির ঘরে পৌঁছে যাবে। তার বেশিও হতে পারে বলে ওই সূত্রটি জানিয়েছে।
রাজ্যে এ বারের নির্বাচনে মোট বুথের সংখ্যা ৭৮ হাজার ৭৯৯। ভোটারের সংখ্যা ৬ কোটি ৯৭ লাখ ৬০ হাজার ৮৬৮। সোমবারও কলকাতার অলিগলিতে রুট মার্চ করতে দেখা গিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের। এখনও পর্যন্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২ কোম্পানি, কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, বীরভূম, নদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর, মালদহ, পশ্চিম বর্ধমানে এক কোম্পানি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হয়েছে। মূলত ভোটারদের আস্থা বাড়ানোর কাজ করছেন ওই জওয়ানেরা।