অনুব্রত অঙ্ক গুলিয়েছেন, বলছে বিরোধী

জেলার বিরোধী নেতাদের কয়েক জনের বক্তব্য, সৈয়দ সিরাজ জিম্মি সম্প্রতি তৃণমূলে গিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৯ ১০:১৬
Share:

অনুব্রত মণ্ডল। —ফাইল চিত্র।

বীরভূম কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থীর জন্য চাই ১২ লক্ষ ভোট— বুধবার রামপুরহাটের এক জনসভায় এমনই মন্তব্য করেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর ওই কথাকে একেবারেই গুরুত্ব দিতে রাজি নয় বিরোধী শিবির। তাঁদের কেউ বলছেন— ‘‘তিনি দিবাস্বপ্ন দেখেছেন।’’ আবার কারও কথায়, ‘‘আতঙ্কে অঙ্ক গুলিয়ে গিয়েছে।’’

Advertisement

রামপুরহাট থানার চাকপাড়া গ্রামে ওই নির্বাচনী সভায় তিনি বলেন, ‘‘বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে সাড়ে ১৭ লক্ষ ভোটার। তার মধ্যে ১৪ লক্ষ ‘পোল’ করতে হবে। দলের অনুকুলে কমপক্ষে ১২ লক্ষ ভোট চাই।’’ বিরোধীদের কথায়, ‘‘হিসেব তা হলে দাঁড়ায় বিরোধীদের জন্য তা হলে বাকি থাকল কী!’’

বিরোধীরা বলছেন, গত বার লোকসভায় কত ভোট পেয়েছিলেন বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী আর বিরোধীরা কত পেয়েছিলেন, শুধু সেটুকু যোগ-বিয়োগ সঠিক ভাবে করতে পারলেই এমন কথা বলতেন না অনুব্রত।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

তাঁদের ব্যাখ্যা, কমিশনের হিসেবে গত বার লোকসভা নির্বাচনে ওই কেন্দ্রে মোট ভোট পড়েছিল ১২ লক্ষ ৭৫ হাজার ৮১৯। শতাব্দী রায় পেয়েছিলেন ৪ লক্ষ ৬০ হাজার ৫৬৮টি ভোট। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাম প্রার্থী পেয়েছিলেন ৩ লক্ষ ৯৩ হাজার ৩০৫টি ভোট। বিজেপির জয় বন্দ্যোপাধ্যায় পেয়েছিলেন প্রায় ২ লক্ষ ৩৬ হাজার ভোট। কংগ্রেসের পক্ষে পড়ে ১ লক্ষ ৩২ হাজার ভোট।

জেলার বিরোধী নেতাদের কয়েক জনের বক্তব্য, আগের বারের সেই কংগ্রেস প্রার্থী সৈয়দ সিরাজ জিম্মি সম্প্রতি তৃণমূলে গিয়েছেন। এ বার কংগ্রেস লড়াইয়ের ময়দানে তেমন জোরাল ভাবে নেই। তর্কের খাতিয়ে যদি ধরেও নেওয়া যায়, কংগ্রেসের ভোট তৃণমূল পাবে, তা হলেও অঙ্ক মেলে না। অনুব্রতের এই ইচ্ছার কথা শুনে প্রথমে কপালে ভাঁজ পড়েছিল দলের কর্মীদেরও। তবে সেটা সামলে তাঁরা বলছেন— ‘‘দাদা একটু বাড়িয়ে বলছেন ঠিকই, আসলে এ বারে বিরোধীদের অস্তিত্ব কই!’’

সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা বলছেন, ‘‘তৃণমূলের অবস্থা এ বার খুব করুণ। দলের মধ্যে ঠিক কত লোক বিজেপি করছেন, নিজেই জানেন না অনুব্রত। নিজেদের অস্তিত্বের আতঙ্ক থেকেই অঙ্ক গুলিয়ে গিয়েছে।’’ অন্য দিকে, বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের কথায়, ‘‘উনি দিবাস্বপ্ন দেখুন। ফলপ্রকাশের পরে তা চুরমার হবে।’’ বিরোধী শিবিরের অনেকেই বলছেন, ‘‘জোর করে মানুষকে নিরপেক্ষ ভাবে ভোটদানে বিরত করা। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মতো নিজেদের শর্তে ভোট করাতে পারলে হয়তো সেটা সম্ভব।’’

নিদান দেওয়ার পাশাপাশি অনুব্রত ১২ লক্ষ ভোট পাওয়ার দাওয়াইও বাতলে দিয়েছিলেন। তাঁর মন্তব্য ছিল, ‘‘সিরিঞ্জ তো ছোট ও বড়, দু’রকমই হয়। রোগ সারাতে গেলে যখন যা প্রয়োজন, তা-ই প্রয়োগ করতে হবে।’’ বিরোধীরা ইঙ্গিত করেছেন সে দিকেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন