ছবি: এএফপি।
তৃণমূলে ভোট দিয়ে ‘বদনাম’ ঘোচাতে হবে ‘বিহারি’দের। ‘বিজেপি সমর্থক’, এটিই তাঁদের ‘বদনাম’।
পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বরে নির্বাচনী জনসভায় বুধবার আসানসোলের মেয়র তথা তৃণমূল বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি এমনই মন্তব্য করেছেন। পরে অবশ্য তিনি দাবি করেন, ‘বিহারি’ বলতে হিন্দিভাষীদের কথা বলতে চেয়েছেন। বিজেপি-র পশ্চিম বর্ধমান জেলা সহ-সভাপতি ঘনশ্যাম রামের পাল্টা টিপ্পনী, ‘‘মেয়র মানলেন, হিন্দিভাষী ভোটারেরা বিজেপির পক্ষে। উনি জানেন না, অহিন্দিভাষীরাও আমাদের সঙ্গেই রয়েছেন।’’
পাণ্ডবেশ্বরের হরিপুরের সভায় আসানসোলের তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেনের উপস্থিতিতে জিতেন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘কথায় আছে, ‘এক বিহারি সব পে ভারী’। এটা বিহারিদের যেমন সুনাম, ঠিক তেমনই বদনাম, বিহারি মাত্রই না কি বিজেপি সমর্থক।’’ বেশির ভাগ হিন্দিভাষী জনতার উপস্থিতিতে জিতেন্দ্রবাবুর দাওয়াই, ‘‘এ বার তৃণমূল প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বদনামটা ঘোচাতে হবে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
প্রশাসনের হিসেবে, আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে মোট ভোটার ১৬,০৭,২০৬। তাঁদের প্রায় ৫০ শতাংশ হিন্দিভাষী। এলাকার রাজনীতির গতিপ্রকৃতির পর্যবেক্ষকদের ধারণা, সে কারণেই সব রাজনৈতিক দল এই কেন্দ্রে হিন্দিভাষীদের বিশেষ গুরুত্ব দেয়। গত বছর জামুড়িয়ায় গিয়ে খোদ তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বক্তব্যের একটা বড় অংশ হিন্দিতে বলেছিলেন। পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ থেকে ‘বিজেপি কখনও কখনও মাথায় ফেট্টি বেঁধে সীমানা পেরিয়ে এক হাতে ঝান্ডা, আর এক হাতে ডান্ডা নিয়ে’ আসানসোলে গোলমাল করে বলেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি।
তৃণমূল প্রার্থীকে হিন্দিভাষীরা কেন ভোট দেবেন, তা বোঝাতে গিয়ে জিতেন্দ্রবাবু পরে বলেন, ‘‘আমি হিন্দিভাষী। অথচ, দিদি (মমতা) আমাকে আসানসোলের মেয়র করেছেন। এটা হিন্দিভাষীদের কাছে গর্বের।’’ ছট পুজোয় দু’দিন ছুটি, হিন্দি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির ঘোষণা-সহ রাজ্য সরকারের নানা সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে তাঁর দাবি, ‘‘বিজেপির প্ররোচনায় পা না দিয়ে বিহারিদের প্রমাণ করতে হবে, তাঁরা বেইমান নন।’’
বিজেপি নেতা ঘনশ্যামবাবুর কটাক্ষ, ‘‘ধানবাদের বহিরাগতেরা তৃণমূলকেই ভোটে সাহায্য করতে আসেন, ঘুরিয়ে সে কথা স্বীকার করে নিলেন মেয়র।’’