প্রচারের ফাঁকেই দুপুরের আহার সেরে নেওয়া।
বাবা থেকে দাদা— পরিবারে রয়েছেন তাবড় তাবড় রাজনীতিবিদ। নিজেও এবার লোকসভা ভোটে তমলুক কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী। লড়ছেন প্রতিপক্ষ বামফ্রন্ট, বিজেপি, কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন দলের মোট ১১ জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে। সেই লড়াইয়ে জিততে এবং প্রচারের কাজে রোজ ছুটতে হচ্ছে কোলাঘাট থেকে হলদিয়া, নন্দীগ্রাম থেকে নন্দকুমার। তার ফাঁকে শরীরকে ঠিক রাখতে দিব্যেন্দু অধিকারীর ভরসা বাড়ির তৈরি খাবারই।
দিব্যেন্দু জানালেন, তাঁর দিন শুরু হয় সকাল ৮টা নাগাদ। ঘুম থেকে উঠেই চাই এক কাপ চা। আর তা খেতে খেতে চোখ বুলিয়ে নেওয়া খবরের কাগজে। সকাল ৯টা নাগাদ মুড়ি আর টক দই দিয়ে সারা হয় প্রাতঃরাশ। এরপর তমলুকে দলের নেতা ও কর্মীদের সঙ্গে ফোনে জেনে নেওয়া দিনের কর্মসূচি। প্রচারের কাজে তমলুকের উদ্দেশ্যে বেরোনোর আগে বাড়িতে ভাত, ডাল, আলু সেদ্ধ, পাঁচ মিশেলি আনাজ ও মাছের তরকারি দিয়ে দুপুরের খাওয়াটা সেরে নেন দিব্যেন্দু। মাছের মধ্যে পাবদা, পার্সের মতো ছোট মাছই রয়েছে তাঁর পছন্দের তালিকায়।
প্রচারের সময় গাড়িতে থাকে মুড়ি, ছোলা ভাজা, চায়ের ফ্লাস্ক আর পানের কৌটো। প্রচার, কর্মিসভার ফাঁকে বিকেলে ওই মুড়ি, ছোলা ভাজা দিয়েই দিব্যেন্দু সারেন টিফিন। আর মিষ্টি পান চিবোনো তো এখন ‘ব্র্যান্ড’ হয়ে গিয়েছে তৃণমূল প্রার্থীর।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সোমবার হলদিয়ার সুতাহাটা এলাকায় প্রচারে গিয়েছিলেন তৃণমূলের এই প্রার্থী। সেখানে কর্মিসভা এবং রোড-শো করেছেন। প্রচারে বাম, কংগ্রেসের প্রার্থীদের আক্রমণের চেয়ে তিনি সরব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে চলা বিজেপি সরকারের নানা ব্যর্থতার বিষয়ে। প্রচারে এসে পড়ছে নন্দীগ্রামে রেল প্রকল্প সম্পূর্ণ করতে কেন্দ্র সরকারের বঞ্চনা, হলদিয়া বন্দরকে স্বশাসন দেওয়ার দাবি ও রাজ্য সরকারের উদ্যোগে তমলুক-সহ সারা জেলায় নানা উন্নয়ন প্রকল্পের তালিকা।
বছর বিয়াল্লিশের দিব্যেন্দু জানান, প্রচার করতে দিনে গড়ে প্রায় ২০০ কিলোমিটারের গাড়িতে যাতায়াত করতে হচ্ছে তাঁকে। স্বাস্থ্য সচেতন দিব্যেন্দু প্রবল গরম থেকে বাঁচতে নিজেও যেমন রোদ এড়িয়ে কর্মসূচি পালন করছেন, তেমনই দলের কর্মীদেরও সেই বার্তা দিচ্ছেন।
দিনভর প্রচারের ধকল সামলে রাতে বাড়িতে ফিরে কন্যা তথা অধিকারী পরিবারের সবচেয়ে ছোট সদস্য তিয়ানকে আদর করাই দিব্যেন্দুর প্রথম কাজ। রাতের মেনুতে পাতে থাকে জল ঢালা ভাত, বেগুন পোড়া আর মাছ ভাজা।
তথাকথিত মর্নিংওয়াক বা জিম নির্ভর শরীরচর্চা করেন না দিব্যেন্দু। শরীরচর্চা না করে প্রচারের ধকল সামলাচ্ছেন কী করে? তৃণমূল প্রার্থী বলেন, ‘‘কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে দিনে গড়ে প্রায় ৫ কিলোমিটারের বেশি রাস্তা হাঁটছি। এটাই তো শরীর ও মনের জোর বাড়িয়ে দিচ্ছে।’’