Lok Sabha Election 2019

ভোটের দু’দিন আগে কোচবিহারের এসপি বদল, নিরপেক্ষ নির্বাচন কী ভাবে? প্রশ্ন পার্থর

সূত্রের খবর, নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা নিয়ে মতবিরোধ ছিল তাঁর। সে কারণেই তাঁকে অপসারণ করা হতে পারে বলে অনুমান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৯ ১৮:০০
Share:

অভিষেক গুপ্ত। —ফাইল চিত্র।

ভোটের আগে আরও লম্বা হল এ রাজ্যের আইপিএস বদলির তালিকা। মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন একটি নির্দেশিকা জারি করে জানিয়ে দেয়, কোচবিহারের পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্তকে অপসারণ করা হচ্ছে। তাঁর জায়গায় কোচবিহারের নতুন পুলিশ সুপার হচ্ছেন অমিতকুমার সিংহ।

Advertisement

নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, কোচবিহারের নবনিযুক্ত পুলিশ সুপারকে মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে দায়িত্ব নিতে হবে। অমিতকুমার আগে আইবি স্পেশাল সুপারিটেনডেন্ট ছিলেন। ভোটের কোনও কাজই অভিষেক গুপ্ত করতে পারবেন না বলে জানা গিয়েছে।

সূত্রের খবর, নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা নিয়ে মতবিরোধ ছিল তাঁর। সে কারণেই তাঁকে অপসারণ করা হতে পারে বলে অনুমান। ৭ এপ্রিল কোচবিহারে নির্বাচনী জনসভায় অভিষেক গুপ্তের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ এনেছিলেন মুকুল রায়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখেননি তিনি। এমনকি, বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবের কাছেও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কোচবিহারের পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্তকে অপসারণ করা নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুকুলবাবু, দিলীপবাবু আগেই বলেছিলেন বদলির তালিকা আরও বাড়বে। তাঁদের বক্তব্যের পরেই যে ভাবে সরিয়ে দেওয়া হল সেটা কি নিরপেক্ষতার লক্ষণ? এতে আমাদের লজ্জার কিছু নেই। যাঁরা বলছেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব, এটা তাদের লজ্জা। এরা নিরপেক্ষ নির্বাচন চালাবে?’’ বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হবেন কি না, তা দলের সঙ্গে আলোচনা করে স্থির করা হবে।

আরও পড়ুন: কোচবিহারে শেষ কথা ডাঙড় বাহিনীরই! অনেক বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীই চাইছে না বিজেপি

এই নিয়ে পাঁচ জন আইপিএস বদল করল নির্বাচন কমিশন। এর আগে কলকাতা ও বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার-সহ মোট চার জন আইপিএস অফিসারকে বদলি করেছিল নির্বাচন কমিশন। তাঁদের জায়গায় আনা হয় নতুন অফিসারদের। অনুজ শর্মার জায়গায় কলকাতা পুলিশের নয়া কমিশনার হিসাবে নিয়োগ করা হয় রাজেশ কুমারকে। আগে যিনি দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এডিজি ছিলেন। অনুজ শর্মাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় রাজ্য পুলিশের এডিজি (অপারেশনস) পদে। বিধাননগরের সিপি জ্ঞানবন্ত সিংহকে সরিয়ে সেই জায়গায় আনা হয় রাজ্য পুলিশের এডিজি (অপারেশনস) নটরাজন রমেশ বাবুকে। জ্ঞানবন্ত সিংহকে অর্থনৈতিক অপরাধ সংক্রান্ত শাখার অধিকর্তা নিয়োগ করা হয়। অর্থনৈতিক অপরাধ সংক্রান্ত শাখার অধিকর্তার পদ থেকে সরিয়ে এনে জয়ন্তকুমার বসুকে দেওয়া হয় এডিজি এস্টাবলিশমেন্টের দায়িত্ব।

তেমনই ডায়মন্ড হারবারের এসপি এস সেলবামুরুগানের জায়গায় নিয়ে আসা হয় কলকাতা সশস্ত্র পুলিশের তৃতীয় ব্যাটেলিয়নের ডিসি শ্রীহরি পাণ্ডেকে। এস সেলবামুরুগানকে রাজ্য পুলিশের সশস্ত্র বাহিনীর ৬ নম্বর ব্যাটেলিয়নের কম্যান্ডিং অফিসার পদেবসানো হয়। বিধাননগরের ডিসি (এয়ারপোর্ট ডিভিশন) আভারু রবীন্দ্রনাথকে আনা হয় বীরভূমের এসপি শ্যাম সিংহের জায়গায়। শ্যাম সিংহকে দেওয়া হয় রাজ্য পুলিশের সশস্ত্র বাহিনীর ১৩ নম্বর ব্যাটেলিয়নের কম্যান্ডিং অফিসার পদটি। কমিশনের নির্দেশ মতোই রাতারাতি বদলি কার্যকর হয়।

এই বদলির পরই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচন কমিশনকে কড়া চিঠি দিয়ে এর প্রতিবাদ জানান। তার উত্তরে নির্বাচন কমিশনও পাল্টা চিঠি দিয়ে জানায়, নির্বাচনের সময় চাইলেই যে কোনও অফিসারকে বদলির সাংবিধানিক অধিকার তাদের রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন