প্রতীকী ছবি।
সকাল থেকেই যেন অপেক্ষার শুরু। কারও চোখ টেলিভিশনের পর্দায় তো কারও মোবাইল স্ক্রিনে। পার্টি অফিসের সারি সারি চেয়ারে কর্মীদের ভিড়। মাঝে মাঝেই কেউ খবর নিয়ে আসছেন, বিকেলের মধ্যে হয়তো ঘোষণা হয়ে যাবে। আবার কেউ জানাচ্ছেন, মনোহর পর্রীকরের মৃত্যুতে সবাই ছুটেছে গোয়ায়। তাই আজ হয়তো হবে না। আবার কি তা হলে একদিনের অপেক্ষা? পার্টি অফিসে বসে থাকা সারি সারি মুখগুলোয় উদ্বেগের ছায়া। কোচবিহার আর আলিপুরদুয়ারে প্রথম দফাতেই ভোট। তৃণমূল তো বটেই, বামও প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়ে আসরে নেমে পড়েছে। সোমবার মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা দেওয়ার কাজও শুরু হয়েছে। পাঁচটি মনোনয়ন এ দিন তুলে নিয়েছে একাধিক রাজনৈতিক দল। সে খবরও পৌঁছে গিয়েছে জেলা বিজেপির সদর দফতরে। তাতে উসখুস আরও বেড়েছে।
অপেক্ষা যে তাঁরা করছেন, সে কথা অস্বীকার করেন না বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের সব কেন্দ্রেই প্রার্থী নরেন্দ্র মোদী। তবে একজনকে প্রার্থী করা হয়। তাঁর নাম জানলে প্রচারে সুবিধে হবে। সে অপেক্ষায় আমরা শুধু নয়, সাধারণ মানুষও আছেন। গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী মনোহন পর্রীকরের মৃত্যুতে তা হয়তো একটু পিছিয়েছে।”
এ দিন রাত ১০টা পর্যন্ত কোচবিহার জেলা পার্টি অফিসে অনেকেই অপেক্ষা করেছেন। খবরের একাধিক চ্যানেল ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখেছেন তাঁরা। অবশেষে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন সবাই। যাওয়ার আগে আফসোর করে গিয়েছেন, ‘‘যা দেখছি তাতে এ বারে কংগ্রেসও হয়তো প্রার্থী দিয়ে দেবে!’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বাড়ি ফেরার পথে এক বিজেপি কর্মী বলেন, “রাতে আর ঘুম আসবে না। আসলে সবাই প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়ে ময়দানে নেমে পড়ছে। আমরাই শুধু পিছিয়ে। তার থেকে বড় কথা, এখন আর অপেক্ষা সইছে না।’’ বিজেপির ন্যাশনাল কাউন্সিল সদস্য নিত্যানন্দ মুন্সি বলেন, “সবাই বিজেপিকে ভালবাসে। তাই অপেক্ষা করছে। বিজেপি সব থেকে বড় দল। প্রার্থী নির্বাচনে নানা পর্যায় রয়েছে। সে কারণে একটু সময় লাগছে।”
আগামী ১১ এপ্রিল কোচবিহারে ভোট। সেই হিসেবেই সবাই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। দলীয় সূত্রের খবর, বিজেপিও সে দিকে লক্ষ্য রেখে কাজ শুরু করেছে। গত লোকসভা উপনির্বাচনে কোচবিহারে বামেদের পিছনে ফেলে দ্বিতীয় হয় তারা। এই সময়ের মধ্যে তাদের শক্তি আরও বেড়েছে। বিজেপি নেতৃত্ব দাবি করেন, এ বারে কোচবিহার আসন তাঁদের দখলে যাবে। এই অবস্থায়, প্রার্থী ঘোষণা না হওয়ায় খানিকটা হলেও তারা যে ব্যাকফুটে, মানছেন অনেকেই। সকাল থেকেই পার্টি অফিসে ভিড়। সবার কাছেই কমবেশি খবর ছিল, এ দিনই তালিকা ঘোষণা হবে। সকাল গড়িয়ে বিকেল তার পর রাত, শেষ পর্যন্ত অবশ্য আরও একটি দিনের অপেক্ষা। কয়েক জন কর্মী বলেন, “মঙ্গলবার ঘোষণা হবেই।”