সিউড়ির চাঁদমারি ময়দানের জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনুব্রত মণ্ডল। বৃহস্পতিবার। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
বীরভূমের ভোটে অনুব্রত মণ্ডলকে ‘বাঘের বাচ্চা’র মতো লড়াই করতে নির্দেশ দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আগামী সোমবার বীরভূমের দুই লোকসভা কেন্দ্র বীরভূম এবং বোলপুরে ভোট। ভোটের শেষ লগ্নের প্রচারে বৃহস্পতিবার সিউড়ির মঞ্চে দলের জেলা সভাপতি অনুব্রতকে সরাসরিই বিজেপি-মোকাবিলা করার ছাড়পত্র দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘কেষ্ট (অনুব্রতর ডাকনাম) তোমার পিছনে ওরা (বিজেপি) লাগবে। তুমি একটু একটু চমকাবে, ধমকাবে। বাঘের বাচ্চার মতো লড়াই করবে।’’
বুধবারই বীরভূমে সভা করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সভায় আসার আগে মোদী টুইটে দাবি করেছিলেন, বীরভূমে বিজেপির শক্তি বাড়ছে এবং সেখানে তৃণমূলের সভা সুপার ফ্লপ! এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বীরভূমে মমতা সভা করে সেই ‘উদীয়মান’ গেরুয়া শক্তিকে রুখতে অনুব্রতকে প্রকাশ্যে ময়দানে নামার নির্দেশ দিলেন বলে রাজনৈতিক মহলের অভিমত।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিগত পঞ্চায়েত ভোটে বীরভূমে প্রায় সাত হাজার আসন দখল করে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বিজেপি। তবে জেলা পরিষদের ৪২টি আসনের মধ্যে ৪১টি তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দখল করেছিল। যার পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধীরা অভিযোগ করেছিল, তাদের প্রার্থীদের ভয় দেখিয়ে, জোর করে মনোনয়ন জমা দিতে দেয়নি তৃণমূলের বাহিনী। সেই সময়ই ‘পথে উন্নয়ন’ দাঁড়িয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন অনুব্রত।
বস্তুত, যে সব জেলায় গণতন্ত্র নেই বলে বিরোধীদের অভিযোগ রয়েছে, তার মধ্যে একেবারে প্রথম দিকেই রয়েছে অনুব্রতর বীরভূম। বিরোধী-মোকাবিলায় সেখানে ‘ঢাকের চড়াম চড়াম’-এর পাশাপাশি ‘গুড়-বাতাসা’, ‘পাঁচন’ এবং ‘নকুলদানা’ খাওয়ানোর কথা বলে বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়িয়েছেন মমতার স্নেহভাজন এই জেলা সভাপতি। এ দিন বীরভূমে ‘জোড়াফুল’-এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বলে অনুব্রতকে তৃণমূল নেত্রীর উপদেশ, ‘‘অনেকে আসবে যাবে। ভালবাসবে। তুমি কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করবে না। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করবে। তোমাদের হিম্মতকে আমি সম্মান করি। স্যালুট করি।’’
বিরোধী বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসকে লাল মাটির জেলায় এক ইঞ্চিও না-ছাড়তে বিভিন্ন সময়ে একের পর এক ‘নিদান’ দিয়েছেন অনুব্রত। যার জন্য তাঁর নামে একাধিকবার নির্বাচন কমিশনে অভিযোগও জানিয়েছে বিরোধীরা। সেই প্রসঙ্গ টেনে মমতা এ দিন বলেন, ‘‘বিজেপির পার্টি অফিস থেকে সবটাই কন্ট্রোল করে। আগের বারও করেছিল। তবে বিজেপির দালালদের চিনে রাখবে।’’