শেষ দফা নির্বাচনের প্রায় ১২ ঘণ্টা আগে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরাকে কড়া চিঠি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। —ফাইল চিত্র।
সপ্তম তথা শেষ দফা লোকসভা ভোটের ঠিক আগে নির্বাচন কমিশনের সততা এবং নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার দাবি, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন সময়ে পক্ষপাতিত্বে ভরা নানা বেআইনি ও অসাংবিধানিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।শনিবার মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরাকে কড়া ভাষায়চিঠি লিখে এই অভিযোগ এনেছেন মমতা।
সরাসরি বিজেপি-র নাম না করে মমতার দাবি, কেন্দ্রের শাসক দলের প্রভাবেই ওই সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শেষ দফায় কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ এবং কেন্দ্রের শাসক দলের প্রভাবমুক্ত থেকে যাতেশান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ ভোট হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য কমিশনকে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
শেষ দফা নির্বাচনের প্রায় ১২ ঘণ্টা আগেএ দিন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরাকে চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার তথা কেন্দ্রের শাসক দলের প্রভাবের জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়ায় একাধিক বেআইনি, অসাংবিধানিক এবং পক্ষপাতিত্বে ভরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এর ফলে রাজ্য সরকার এবং তার আধিকারিকদের তো বটেই, সাধারণ মানুষকেও নানা ভাবে হেনস্থা ও হামলার মুখে পড়তে হয়েছে।’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আরও পড়ুন: জোট তৎপরতা তুঙ্গে, সকালে রাহুলের পর সন্ধ্যায় মায়াবতী-অখিলেশের সঙ্গে কথা চন্দ্রবাবুর
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা চিঠি।
শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েই ক্ষান্ত হননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই চিঠিতে গত মঙ্গলবার বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন তিনি। সেই সঙ্গে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের র্যালিরআসল উদ্দেশ্য নিয়েও বিস্ফোরক দাবি করেছেন মমতা।নির্বাচন কমিশন নিযুক্ত কলকাতার পুলিশ কমিশনার ওই দিন কেন কলেজস্ট্রিটে ১৪৪ ধারা তুলে দিয়েছিলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়:‘রাজ্যের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যময় ভাবমূর্তি নষ্ট করতে, এই রাজ্যের মানুষ তথা সরকারেরমানহানির জন্যই সে দিন ইচ্ছাকৃত ভাবে রোড শোয়ের নামে এক অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল।’
আরও পড়ুন: কেদারনাথের গুহায় ধ্যানে বসলেন নরেন্দ্র মোদী, সোমনাথ মন্দিরে পুজো অমিতের
বিবেক দুবে ও অজয় নায়েকের নিযুক্তি নিয়েও কমিশনের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছেন মমতা। তিনি লিখেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন দু’জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিককে বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসাবে নিয়োগ করেছে, যা আইনানুগ নয়।’ মমতার দাবি, “এই বিশেষ পর্যবেক্ষকেরা সব সময়েই পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করেছেন। বিভিন্ন সময়ে কেন্দ্রীয় সরকার তথা কেন্দ্রের শাসক দলের নির্দেশই মেনে চলেছেন।”
আরও পড়ুন: ইন্দিরা গাঁধীর ধাঁচে আমাকেও খুন করতে পারে বিজেপি: কেজরীবাল
এ সমস্ত অভিযোগ কমিশনের নজরে আনা হলেও তাতে কাজের কাজ কিছু হয়নি বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। গণতন্ত্রিক প্রতিষ্ঠান তথা দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো রক্ষায় কমিশনকে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
(পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেবাংলায় খবরজানতে পড়ুন আমাদেররাজ্যবিভাগ।)