বৃহস্পতিবার রাতে পিংলায় ভারতী ঘোষের গাড়ি আটক করে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে ভোট হবে আগামী রবিবার। তার দু’দিন আগে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে টাকা পাচারের অভিযোগে ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ পিংলার মণ্ডলবাড়ের কাছে পুলিশের নাকা তল্লাশি চলছিল। অভিযোগ, গাড়িতে টাকা-সহ হাতেনাতে ধরা হয় ওই প্রাক্তন আইপিএস-কে। ১ লক্ষ ১৩ হাজার ৮৯৫ টাকা উদ্ধার হয় তাঁর কাছ থেকে। কোথা থেকে টাকা এল, কোথায় তা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, জানতে ভারতীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে ভারতীর দাবি, “ভোটের খরচের জন্য ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলেছিলাম। আর এ বিষয়ে সব নথিপত্রই আমার কাছে আছে।” পাশাপাশি তিনি এটাও দাবি করেন, দলীয় সমর্থকদের উপর তৃণমূলের অত্যাচারের খবর পেয়ে তাঁদের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। সে সময় পথেই পুলিশ তাঁর গাড়ি আটকায়। পাল্টা অভিযোগ তুলে ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী জানান, পুরো টাকাটাই তাঁর কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু পুলিশের সেই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। ভারতী বলেন, “আমার গাড়ির চালকের কাছে ছিল প্রায় ৫ হাজার টাকা এবং আমার বাকি সঙ্গীদের কাছেও কিছু টাকা ছিল। পুলিশ সব টাকা একটা ব্যাগে রেখে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
ভারতীর আরও দাবি, বাজেয়াপ্ত জিনিসপত্রের তালিকায় ( সিজার লিস্ট) তিনি সই করেননি। যে পরিমাণ টাকা উদ্ধার হয়েছে সেটা উল্লেখ করলেই তবে সই করবেন বলে জানান পুলিশকে। শুধু তাই নয়, তাঁর সঙ্গীদের কাছে থেকে কত টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে সব উল্লেখ না করলে এবং তাঁদের দিয়ে সই না করালে বাজোয়াপ্ত তালিকায় সই করবেন বলেও জানিয়ে দেন পুলিশকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, গোটা বিষয়টি তারা জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছে। নির্বাচন কমিশনকেও এ ব্যাপারে জানানো হবে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, খবর ছিল ভোটারদের ৫০০, ১০০০ টাকা বিলি করতে যাচ্ছেন ভারতী। সেই অনুযায়ী পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ টাকা-সহ ভারতী ঘোষের গাড়ি আটক করে।
আরও পড়ুন: অযোধ্যা মামলা: মধ্যস্থতাকারীদের ১৫ অগস্ট পর্যন্ত সময় দিল সুপ্রিম কোর্ট
আরও পড়ুন: প্রমাণ করুন, না পারলে সবার সামনে ১০০ বার কান ধরে ওঠবোস করতে হবে: মমতা
ভারতী ঘোষের গাড়ি থেকে ‘টাকা উদ্ধার’ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “পুলিশ যদি ধরে থাকে, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে তারাই।”
ভোট পর্বের শুরু থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছেন ভারতী। সোনা প্রতারণা-সহ বিভিন্ন মামলায় নাম জড়িয়েছে তাঁর। সোনা মামলা এখনও সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। তবে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, এখনই বিজেপি প্রার্থীকে গ্রেফতার করা যাবে না। তার ফলে ভোটে দাঁড়ানো থেকে প্রচারে নানা জায়গায় ঘুরে বেড়ানো সম্ভব হয়েছে ভারতীর পক্ষে। কিন্তু প্রচার পর্বেও বিতর্ক তাঁর পিছু ছাড়েনি। কয়েক দিন আগেই কেশপুরে গিয়ে উত্তরপ্রদেশ থেকে ছেলে এনে তৃণমূলকর্মীদের ‘কুকুরের মতো’ মারার হুমকি দিয়েছিলেন ভারতী।