জাদুর আগ্রহ বাড়াতে ‘ম্যাজিক মেলা’

দুঃস্থ শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানো ছাড়াও সরকারি ও বেসরকারি প্রকল্পের প্রচার-সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জাদুকরদের কাজের সুযোগ তৈরি করে দেওয়ারও ব্যবস্থা করে ‘ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ম্যাজিক অ্যাসোসিয়েটস’ (ফিমা) নামের এই সংগঠন। সল্টলেকে সংগঠনের প্রধান কার্যালয়। জরুরি সভা-সমিতি সেখানেই হয়।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৮ ০১:৫৫
Share:

স্কুলে পড়তে পড়তেই জাদুর প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়েছিল তাঁর। কিন্তু কর্মজীবনের ব্যস্ততাতেও সেই নেশায় ভাটা পড়েনি শিবপুর এবং খড়গপুর আইআইটি-র প্রাক্তনীর। আর তাই রাজ্যের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা জাদুকরদের সংগঠিত করে তিনি গড়ে ফেলেছেন আস্ত একটা সংগঠন।

Advertisement

হাওড়ার সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, জাদুর সঙ্গে যুক্ত মানুষকে সঙ্ঘবদ্ধ করা, তাঁদের পরিচিতি দেওয়া এবং নতুন প্রজন্মের মধ্যে জাদু নিয়ে আগ্রহ তৈরি করার লক্ষ্যে কাজ করে এই সংগঠন। বাংলার গণ্ডি ছাড়িয়ে তা এখন ডালপালা মেলছে সারা দেশে। হাটে-বাজারে বা ট্রেনে জাগলিং, শ্যাডোগ্রাফি এবং হরবোলার খেলা দেখানো শিল্পীও আছেন এই সংগঠনে। সঞ্জয়বাবু বলেন, ‘‘যাঁরা জাদুর খেলা দেখান, তাঁদের অনেকের জীবনেই আর্থিক অনটন থাকে। এই খেলায় শিশু থেকে বয়স্ক সকলেরই বিনোদন হয়। অথচ ইন্টারনেট আর মাল্টিপ্লেক্সের এই যুগে জাদুর খেলায় আগ্রহ হারিয়েছেন তাঁরা।’’
এর ফলে তলানিতে ঠেকেছে জাদু শিল্প। পরিস্থিতি এমনই যে, গত পাঁচ বছরে কম করে ১৫ জন জাদুকরের জীবন আর্থিক অনটনে হারিয়ে গিয়েছে।

সঞ্জয়বাবুর শিক্ষাগুরু গৌতম গুহ ছিলেন পেশায় মেকনিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু সেই নেশার টানে অনেক চড়াই-উতরাই পেরোতে হয়েছিল তাঁকে। সে সব থেকেই পাঠ নিয়েছিলেন সঞ্জয়বাবু। ২০০৭ সালেই হাওড়া, হুগলি, নদিয়া, কলকাতা-সহ রাজ্যের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা জাদু চর্চার ক্লাবগুলিকে সংগঠিত করার কাজ শুরু করেন তিনি। একই ছাতার নীচে জাদুকরদের আনার কাজে অনেকটা সাফল্যও এসেছে। তিনি জানান, জাদু নেশা। কিন্তু পেশা নয়। সম্ভবত সে কারণেই সংগঠন তৈরি করতে সকলের সাহায্য পাওয়া গিয়েছে।

Advertisement

দুঃস্থ শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানো ছাড়াও সরকারি ও বেসরকারি প্রকল্পের প্রচার-সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জাদুকরদের কাজের সুযোগ তৈরি করে দেওয়ারও ব্যবস্থা করে ‘ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ম্যাজিক অ্যাসোসিয়েটস’ (ফিমা) নামের এই সংগঠন। সল্টলেকে সংগঠনের প্রধান কার্যালয়। জরুরি সভা-সমিতি সেখানেই হয়।

বিজ্ঞান এবং বিনোদনের মিশেলে জাদুর প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়াতে ২০০৯ সাল থেকে ‘ম্যাজিক মেলা’র আয়োজন করছে ফিমা। চলতি বছরেও ২৮-৩০ মার্চ মোহরকুঞ্জে অনুষ্ঠিত হবে সেই মেলা। তিন দিনের এই মেলায় আট থেকে আশি, সকলের জন্য ম্যাজিক দেখা এবং শেখার উপায় থাকবে। এ ছাড়াও জাদুর বই-সহ ওই সংক্রান্ত বিভিন্ন উপকরণ পাওয়া যাবে সেখানে। হাতের ছায়ায় গল্প বলা, শ্যাডোগ্রাফি, কথা-বলা পুতুল, ভ্যানিশ করার জাদু সব কিছুই থাকবে। বাংলা ছাড়াও তামিলনাড়ু, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্র থেকে জাদুকরেরা আসেন এই মেলায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন