দলের বিল্বগ্রাম অঞ্চল কমিটির সভাপতিকে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় অবশেষে মূল অভিযুক্ত তথা তৃণমূল নেতা জয়দেব মণ্ডলকে গ্রেফতার করল আউশগ্রাম থানার পুলিশ। শনিবার ভোরে গুসকরা পুরসভা ভবন লাগোয়া থেকে তাঁকে ধরা হয়। যদিও খুনের ঘটনার পরে অভিযুক্তরা দলের কেউ নন বলে দাবি করেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
গত ১৩ জুন রাতে আউশগ্রামের নেতা উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায় বনপাশ রেলগেটের পাশে চায়ের দোকানে কয়েক জন সঙ্গীর সঙ্গে বসেছিলেন। সেখান থেকে তাঁকে রাস্তায় টেনে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয়। শুরু হয় বোমাবাজিও। মনা বাগদী নামে ওই নেতার এক অনুগামীও আক্রান্ত হন।
এই ঘটনার কথা চাউর হওয়ার পরেই নিহত নেতার পরিবার এবং অনুগামীরা এলাকারই তৃণমূল নেতা জয়দেব-সহ বারো, চোদ্দো জনকে খুনে অভিযুক্ত বলে দাবি করেন। এলাকাবাসী ও তৃণমূল কর্মীদের একাংশও জানান, বিল্বগ্রাম পঞ্চায়েতের উপরে রাশ আলগা হচ্ছিল উজ্জ্বলের। ক্ষমতা বাড়ছিল জয়দেব মণ্ডলের। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ছোটখাটো গোলমালও অতীতে দেখা গিয়েছিল। ঘটনার পরে গত রবিবার এলাকায় গিয়ে বিক্ষোভের আঁচ টের পান বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দারও। তবে দলের তরফে আউশগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত অনুব্রত মণ্ডল ও আউশগ্রাম ১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শেখ সালেকেরা (টগর) পাল্টা দাবি করেন, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উজ্জ্বল খুন হননি। খুন করেছে সিপিএম। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে সিপিএম।
তবে শনিবার দলেরই নেতা গ্রেফতার হওয়ার পরেও অনুব্রত বলেন, ‘‘অভিযুক্তরা দলের কেউ নন।’’ গ্রেফতারির বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি শেখ সালেক। তবে বিধায়ক অভেদানন্দবাবু অবশ্য বলেছেন, ‘‘মূল অভিযুক্ত গ্রেফতার হওয়ায় আমরা খুশি।’’ এর আগে আরও বেশ কয়েক জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। তাঁরাও জয়দেববাবুরই অনুগামী বলে দলে পরিচিত বলে জানা যায়।
এ দিন গ্রেফতারির পরে নিহত নেতার মা অণিমাদেবী সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেন, ‘‘জয়দেবকে পুলিশ ধরায় আমরা খুবই খুশি। আইনি পথে ওর ফাঁসি চাই।’’
ধৃতকে এ দিন বর্ধমান আদালতে তোলা হলে জয়দেবকে আট দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। তবে এ দিন আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে তিনি দাবি করেন, ‘‘ঘটনার সময়ে আমি ছিলাম না।’’