উদ্বোধন: জানবাজার সম্মিলিত-র কালীপুজোয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী
কালীপুজো ও দেওয়ালিতে এ রাজ্যে রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্তই বাজি পোড়ানো যাবে। শুক্রবার প্রশাসন সূত্রে এ কথা জানানো হয়েছে। কলকাতার ক্ষেত্রে বাজি পোড়ানোর সময়সীমা ঘোষণা করেছে লালবাজারও। নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে বাজি পোড়ানো কড়া ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা। এ দিন কালীপুজোর উদ্বোধনে বেরিয়ে নাগরিকদের নিয়ম মেনে বাজি পো়ড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
গিরিশ পার্ক এলাকার একটি পুজোর উদ্বোধনে তিনি বলেন, ‘‘নিয়ম মেনেই বাজি পো়ড়ান। এক জনের আনন্দ যেন অন্যের নিরানন্দের কারণ না হয়।’’ শেক্সপিয়র সরণির একটি মণ্ডপে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে একই সুর শোনা গিয়েছে পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের গলায়। তাঁর আশা, নাগরিকেরা নিয়ম মেনে চলবেন।
গত ২৩ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট এই সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল। পরে অবশ্য তামিলনাড়ু সরকারের আবেদনের ভিত্তিতে শীর্ষ আদালত রায় কিছুটা সংশোধন করে জানিয়েছে, কোনও রাজ্য বিবেচনা করে সময়সীমা বদল করতে পারে। তবে মোট সময়সীমা কখনই দু’ঘণ্টার বেশি হবে না। এ দিন তামিলনাড়ু সরকারও বাজি পোড়ানোর সময়সীমা ঘোষণা করেছে। তারা জানিয়েছে, সেই রাজ্যে সকাল ৬টা থেকে ৭টা এবং সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৮টা, এই দুই পর্বে বাজি পোড়ানো যাবে।
আরও পড়ুন: কাউন্সিলরের বাড়িতেই নিষিদ্ধ বাজি, চুপ পুলিশ!
এ রাজ্যের পরিবেশ দফতরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘কিছু কিছু রাজ্যে বা কিছু উৎসবে বাজি পোড়ানোর নির্দিষ্ট সময় থাকে। কেউ সকালে পোড়ান, কেউ রাতে। আমাদের রাজ্যে কালীপুজো ও দেওয়ালির রাতেই বাজি পোড়ানোর রেওয়াজ রয়েছে। তাই সময়সীমা বদলের প্রয়োজন হয়নি।’’ কলকাতা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত যুগ্ম কমিশনার (সদর) সুপ্রতিম সরকার বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত অনুমোদিত বাজি পোড়ানো যাবে। এই নির্দেশ লঙ্ঘন করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেওয়ার পরেও রাজ্যে কেন বাজি পোড়ানোর সময়সীমা নিয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি, সেই ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছিলেন পরিবেশকর্মীদের কেউ কেউ। কিন্তু রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এক পদস্থ কর্তার ব্যাখ্যা, সুপ্রিম কোর্ট সব রাজ্যকেই নির্দেশ দিয়েছে। ফলে সেই সময়সীমা মেনে চললে আলাদা কোনও বিজ্ঞপ্তি জারির প্রয়োজন নেই। তামিলনাড়ুর মতো যদি সময়সীমায় পরিবর্তন আনে সে ক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রয়োজন।
তবে পরিবেশকর্মীরা এ-ও বলছেন, সময়সীমা ঘোষণা করা হলেও এ নিয়ে এখনও সে ভাবে বিজ্ঞাপন বা প্রচার নজরে আসেনি। তবে কলকাতায় বাজি বাজারগুলির কর্তারা প্রচার করছেন। পরিবেশকর্মী ও আইনজীবী গীতানাথ গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘এই প্রচারের দায়িত্ব প্রশাসনকেই নিতে হবে।’’ লালবাজারের এক কর্তার দাবি, থানাগুলি এই প্রচার চালাবে। বিভিন্ন মোড়ে পুলিশের এলইডি স্ক্রিনের মাধ্যমেও প্রচার শুরু হবে।