সিবিআই নিয়ে আবার সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শাসক দলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত চিত্র-প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতাকে দিন কয়েক আগে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। এখন তিনি ভুবনেশ্বরে জেল হেফাজতে। সোমবার নবান্নে মমতা বলেন, ‘‘চলচ্চিত্র, শিল্প, সাংবাদিক জগৎ—কাকে ফাঁসানো হয়নি? প্রত্যেককে ফাঁসানো হচ্ছে রাজনৈতিক ভাবে। সিবিআইয়ের কি সেই বিশ্বাসযোগ্যতা রয়েছে?’’
সিবিআই-এর মতো স্বয়ংশাসিত সংস্থাগুলিকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে বারবারই অভিযোগ করেন মমতা। এ দিন তার পুনরাবৃত্তি করে বলেন, ‘‘এই প্রতিষ্ঠানগুলিকে সম্মান করি। কিন্তু এদের আমলে যা ইচ্ছা ঘটছে।’’
মমতার অভিযোগ, ‘‘নির্বাচন এলেই এজেন্সি দিয়ে সকলকে ভয় দেখানো হচ্ছে। স্টিং অপারেশনের নামে অনেক টিভি চ্যানেলকে টাকা দেওয়া হয়েছে। বাংলার নন তাঁরা।’’ ভোটের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে হেনস্থা করতেই এ ধরনের স্টিং অপারেশন হচ্ছে বলে দাবি করে মমতা বলেন, ‘‘ভোটের আগে এজেন্সিদের দিল্লিতে ডেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।’’ উল্লেখ্য, রাজ্যে ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের ঠিক আগেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে ২০১৪-র লোকসভা ভোটের সময়কালীন একটি স্টিং অপারেশনের ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ পায়। ‘নারদ-কেলেঙ্কারি’ বলে চিহ্নিত ওই বিষয়টি এখনও বিচারাধীন।
প্রাক্তন ইউপিএ সরকারের অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের বিরুদ্ধে সিবিআই-তদন্তের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘ব্যাপারটাও আমার কানে এসেছে। কিছু ছিল না। ওটা কোনও কেসই নয়। আগে যারা বলেছিল কোনও কেস নয়, তারাই নতুন করে চার্জশিট দিয়েছে। এটা ধোপে টিকবে না।’’ এ রাজ্যেও সিবিআই-তদন্তে একের পর এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে মমতার দাবি, ‘‘এখানেও যত কেস হয়েছে, ধোপে টিকবে না। কোর্টের বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারি না। চাই, নিরপেক্ষ ভাবে কোর্টই যা নির্দেশ দেওয়ার দিক।’’
আগামী দিনে বিজেপিকেও দুর্নীতির শাস্তি পেতে হবে বলে আক্রমণ করছেন মমতা। সেই সুর চড়িয়েই এ দিন মমতার হুঁশিয়ারি, ‘‘কাল তো তোমরা ক্ষমতায় থাকবে না। অন্য কেউ যদি ক্ষমতায় এসে তোমার বিরুদ্ধে এ সব করে? এগুলো করা ঠিক নয়। কেউ যদি ভাবে, বিচারবিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মিডিয়া, এজেন্সি দখল করব, ইতিহাস বদলে দেব, দেশটাকে পাল্টে দেব, মানুষে মানুষে ভাগাভাগি করব, এসব চলবে না।’’