নেত্রীর ধমকে পিছপা রাজেন

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের কাছেও এই উদ্বেগের খবর পৌঁছেছে। সর্বোচ্চ নেতৃত্বের তরফে রাজেনকে ধমক দিয়ে আপাতত কর্মসূচি স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৩৩
Share:

ফাইল চিত্র।

বিনয় তামাঙ্গ-অনীত থাপা জুটি সবে জিটিএ-র কেয়ারটেকার বোর্ডের দায়িত্ব পেয়েছেন। ধীরে ধীরে পাহাড়ে উন্নয়নমূলক কাজকর্ম শুরুর চেষ্টা করছেন। এমন সময়ে দার্জিলিং-কার্শিয়াং-কালিম্পঙে দলীয় সংগঠনকে চাঙ্গা করতে জোর কদমে নেমে ঘরে-বাইরে বিতর্কে জড়িয়েছেন তৃণমূলের পাহাড় কমিটির সভাপতি রাজেন মুখিয়া। মোর্চা সূত্রের খবর, বিনয়-অনীত শিবিরের তরফে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের কাছেও এই উদ্বেগের খবর পৌঁছেছে। সর্বোচ্চ নেতৃত্বের তরফে রাজেনকে ধমক দিয়ে আপাতত কর্মসূচি স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, দলনেত্রীর নির্দেশে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবও একই পরামর্শ দিয়েছেন দলের পাহাড় সভাপতিকে। রাজেন বলেছেন, ‘‘দলের সর্বোচ্চ নেতারা যা চান, সেটাই হবে। সংগঠনের কাজকর্ম নিজস্ব গতিতে চলবে। আপাতত, বন্‌ধে বিপর্যস্ত পাহাড়বাসীর পাশে দাঁড়ানোই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’’

এ সব সত্ত্বেও মোর্চার আলোচনাপন্থী শিবির কিন্তু পুরোপুরি আশ্বস্ত হতে পারেনি। কার্শিয়াঙের অনীত-ঘনিষ্ঠ একাধিক
নেতা জানান, রাজ্যে ক্ষমতাসীন দল যদি পাহাড়ে সংগঠন বাড়াতে যায়, তা হলে নানা সুবিধা পেতে ও ক্ষমতার কাছাকাছি থাকতে ভিড় হবেই। চার মাসে আগে পাহাড়ে পুরভোটের ফলও সে কথাই বলছে। বিনয় শিবিরের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, পাহাড়কে পুরোপুরি ছন্দে ফেরানোর আগে রাজ্যের শাসকদল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নামলে গুরুঙ্গ-শিবিরের অনেকে সে দিকে ঝুঁকতে পারেন। সে ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ফের ঘোরালো হয়ে যেতে পারে বলে শঙ্কিত আলোচনাপন্থীরা।

Advertisement

তৃণমূল নেতাদের একাংশ একান্তে সেটা মানছেনও। পাহাড় তৃণমূল সূত্রেই জানা গিয়েছে, মিরিক বেদখল হওয়ার পরে এমনই আশঙ্কায় পড়ে যান বিমল গুরুঙ্গ। গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পরবর্তী আন্দোলন এবং পাহাড়কে অচল করে রাখার পিছনে সেই ভয় অন্যতম কারণ।

এ বারে সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সাবধানে পা ফেলতে চাইছে শাসক দল। তাই উত্তরকন্যায় সর্বদল বৈঠকের পরে দলীয় আলোচনায় দলনেত্রী বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, পাহাড়ে বহুদলীয় রাজনীতির পরিবেশ বজায় রাখতে তাঁরা বদ্ধপরিকর হলেও এখনই আগের মতো হইহই করে মিটিং-মিছিলে যাবে না তৃণমূল।

তবু রাজেন ও তাঁর অনুগামীরা আচমকা অফিস খুলে কর্তৃত্ব দেখানোর চেষ্টা করায় পাহাড়ের রাজনীতিতে ফের আলোড়ন শুরু হয়। দল সূত্রের খবর, পাহাড়ে ‘শান্তি ও উন্নয়নের বৃহত্তর স্বার্থে’ তাই গোড়াতেই তাতে জল ঢেলে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন