রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির জন্য ফের ডিভিসির জল ছাড়াকেই দায়ী করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে এ বারের বন্যাকে ‘ম্যানমেড’ বলেছিলেন মমতা। বিধানসভায় মঙ্গলবার লিখিত বিবৃতি দিয়ে সেই কথারই পুনরাবৃত্তি করলেন তিনি।
ডিভিসি প্রচুর জল ছাড়ায় দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে বিধানসভায় অভিযোগ করেন মমতা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ডিভিসির বাঁধগুলি (ড্যাম) ড্রেজিং না করলে জলাধারের জলধারণের ক্ষমতা বাড়বে না। আর বাঁধের জলধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি না হলে এই পরিস্থিতিই চলতে থাকবে।’’ রাজ্যের তরফে বারবার ডিভিসি-কে অনুরোধ করা সত্ত্বেও না জানিয়েই তারা জল ছাড়ে বলে এ দিনও অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিশেষজ্ঞরা যদিও মনে করেন, পাঞ্চেত, মাইথনের মতো ডিভিসির বাঁধ ড্রেজিং করা কার্যত অসম্ভব। তাঁদের মতে, এই ধরনের বাঁধগুলি ড্রেজিং করে পলি এক জায়গা থেকে তুলে আর এক জায়গায় নিয়ে ফেলতে যে খরচ হবে, তাতে নতুন একটি বাঁধ তৈরি করে ফেলা সম্ভব। এই আর্থিক কারণেই পলি তোলার কাজ কিছুটা হলেও স্লথ বলে তাঁদের বক্তব্য। তবে ডিভিসি যাতে বেশি জল না ছাড়ে, সে জন্য এ রাজ্যের সব রাজনৈতিক দলকে এক হয়ে কেন্দ্রের কাছে অনুরোধ করতে বলেছেন মমতা।
এ বছর এখনও পর্যন্ত রাজ্যে বন্যায় ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন মমতা। তিনি বলেছেন, ২ হাজার ৫৩৩ কোটি টাকারও বেশি ফসল এবং ৪ লক্ষ ২২ হাজার ৭৫২ হেক্টর কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বন্যায়। বন্যাদুর্গত এলাকায় ২ লক্ষ ৭০ হাজার ত্রিপল, দেড় হাজার মেট্রিক টন চাল এবং ১০ কোটি টাকার বিপর্যয় মোকাবিলা সামগ্রী সরকারের তরফে বিলি করা হয়েছে।