জেলার আশা উসকে দিয়ে গেলেন মমতা

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় সেই আশাই নতুন করে দানা বাঁধতে শুরু করল। এ দিন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় ৭৫৭ কোটি টাকার ১১৭টি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন মমতা।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য ও নির্মল বসু

বসিরহাট শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৪৮
Share:

পাশে-আছি: হাড়োয়ায় নামার পরে। —নিজস্ব চিত্র।

খুব শীঘ্রই বসিরহাট এবং সুন্দরবনকে জেলা ঘোষণা করা হবে। শুক্রবার বসিরহাটের হাড়োয়া সার্কাস মাঠে এসে এই কথা বলে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

তাঁর দাবি, বসিরহাট এবং সুন্দরবনকে দু’টি আলাদা জেলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক ভবনের জন্য আদালতের অনুমতি মিললেই কাজ শুরু হবে।

এর আগেও জেলায় এসে এ কথা বলে গিয়েছিলেন মমতা। তারপর থেকে আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেন মানুষ। এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় সেই আশাই নতুন করে দানা বাঁধতে শুরু করল। এ দিন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় ৭৫৭ কোটি টাকার ১১৭টি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন মমতা। পাশাপাশি প্রায় ৯০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৮টি প্রকল্পের উদ্বোধনও করেন। তবে বসিরহাটের মানুষ ভেবেছিলেন, হয় তো এ দিনই মুখ্যমন্ত্রী বসিরহাটকে জেলা নয় পুলিশ জেলা ঘোষণা করবেন।

Advertisement

এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রায় একশো কোটি টাকা ব্যয়ে হাসনাবাদ-পারহাসনাবাদ সেতুটির দ্রুত কাজ শেষ করা হবে। বসিরহাট থানার চাপ কমাতে মাটিয়ায় একটি নতুন থানার উদ্বোধন করা হল।’’ পুলিশ জেলা ঘোষণা না হওয়ায় বসিরহাটবাসী খানিকটা হতাশ হয়েছিলেন ঠিকই, তবে সেতু ও মাটিয়া থানার কথা শুনে আখেরে খুশি বসিরহাট।

খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, মুখ্যমন্ত্রী বসিরহাটের মানুষকে অনেক কিছু দিয়ে গেলেন। সুন্দরবন এলাকায় কয়েক’শো কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু, গ্রামীণ সড়ক যোজনায় বসিরহাটের ৮টি বিধানসভায় ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৪০ কিলোমিটার রাস্তা, ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৬টি কার্লভার্ট, ৩ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে প্রতি বিধানসভায় কর্মতীর্থের উদ্বোধন হয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কৃষি ঋণ মকুব থেকে শুরু করে প্রতিটি স্কুলের বিদ্যুৎতের খরচ কম করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।’’

বসিরহাটের ইটিন্ডায় ইছামতীর পাশে বিভূতিভুষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও গৌরীদেবীর স্মৃতি বিজড়িত ফেরিঘাটটি মুখ্যমন্ত্রীর হাতে নতুন চেহারা পেল। ইছামতী নদীর পাড়ে অবহেলায় পড়ে থাকা ফেরিঘাট দু’টি প্রায় ৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নতুন ভাবে সেজে উঠতে চলেছে। এলাকাবাসী খেয়াঘাট দু’টির নতুন রূপ পাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা। এই ফেরিঘাটের সঙ্গে জড়িয়ে আছে সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতি। পানিতরের বাসিন্দা আনন্দ চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘ফেরিঘাট দু’টির আধুনিকীকরণ জরুরি ছিল। একটি বিভূতিভুষণ ও অন্যটি গৌরীদেবীর নামে নামকরণ করা হলে ভাল লাগবে।’’ বসিরহাট ১ বিডিও সৌরভ মিত্র বলেন, ‘‘এক চালার ছাউনির নীচে ফেরিঘাট ছিল। বর্তমানে পাকা ছাদের নীচে নীল সাদা ঘর হয়েছে। সংস্কারের পর দু’টি ফেরিঘাট চেহারা বদলে গিয়েছে। মানুষের আবেগের কথা ভাবা হচ্ছে।’’

মাটিয়া থানা, বারাসত ২ এবং দেগঙ্গায় ভূমি ও রাজস্ব দফতর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। বারাসতের কাজিপাড়ায় যশোর রোডের উপরে রেলব্রিজ তৈরির জন্য ভাঙা পড়ছে কিছু দোকান। সেখানকার হকারদের পুনর্বাসনের জন্য মার্কেট কমপ্লেক্স, বারাসত শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লির মতো বেশ কিছু প্রকল্পেরও শিলান্যাস হয়েছে এ দিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন