আবার ফিরাও মোরে, গুঞ্জনে দলত্যাগীরা

বিধানসভার বাইরে তৃণমূলের পতাকা হাতে নিয়ে দলত্যাগী বিধায়কদের বেশির ভাগই এ বার লোকসভা ভোটে নিজেদের এলাকায় বিজেপির কাছে পিছিয়ে পড়েছেন।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৯ ০৩:১০
Share:

খাতায়-কলমে কংগ্রেসে নাম থাকলেও একে একে তৃণমূলে পা বাড়িয়েছিলেন বেশ কিছু বিধায়ক। লোকসভা ভোটে তৃণমূল ধাক্কা খাওয়ার পরে দলত্যাগী সেই সব কংগ্রেস বিধায়কদের অনেকেই কি আবার পুরনো ঘরে আশ্রয় খুঁজছেন? পরিষদীয় রাজনীতিতে এখন গুঞ্জন অন্তত এমনই!

Advertisement

বিধানসভার বাইরে তৃণমূলের পতাকা হাতে নিয়ে দলত্যাগী বিধায়কদের বেশির ভাগই এ বার লোকসভা ভোটে নিজেদের এলাকায় বিজেপির কাছে পিছিয়ে পড়েছেন। তার পরেই পুরনো দলের কথা ফের মনে পড়ছে তাঁদের! কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে একান্তে যোগাযোগ করে তাঁদের বেশ কয়েক জন আর্জি জানাচ্ছেন, তাঁদের বিধায়ক-পদ খারিজে পুরনো দল যেন সক্রিয় না হয়। পরিস্থিতি আমূল বদলে গিয়েছে বুঝে তৃণমূল নেতৃত্বও এখন ওই দলত্যাগীদের ধরে রাখতে খুব একটা জোর করছেন না।

সূত্রের খবর, বিধানসভার বর্ধিত বাজেট অধিবেশন শুরু হতেই উত্তরবঙ্গের এক দলত্যাগী বিধায়ক কংগ্রেস পরিষদীয় দলের কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন, কোনও একটি আলোচনায় তাঁর নাম কংগ্রেসের বক্তা-তালিকায় তুলে দিতে। আইনত তিনি কংগ্রেসের বিধায়ক। তাই এতে কোনও অসুবিধা নেই। উল্টে এ ভাবে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান বুঝিয়ে দেওয়া যাবে। অধীর চৌধুরী লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা হওয়ার পরে মুর্শিদাবাদের দলত্যাগী অন্তত দুই বিধায়ক ফের কংগ্রেসের দরজায় কড়া নেড়েছেন। কংগ্রেস সূত্রের খবর, তৃণমূলে যাওয়া দক্ষিণবঙ্গের এক বিধায়ক আবার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের বাড়ি চলে গিয়েছেন দলত্যাগ-বিরোধী আবেদন ঠেকানোর আর্জি নিয়ে!

Advertisement

কংগ্রেস এবং বামেদের অভিযোগ, তাদের দল ভাঙিয়ে রাজ্যে বিজেপির জন্য জমি তৈরি করেছে তৃণমূলই। এখন বিজেপি একই কায়দায় তৃণমূল ভাঙাচ্ছে। পরিস্থিতি বুঝে দলত্যাগ-বিরোধী আইন প্রয়োগ করে বিধায়ক-পদ খারিজের ব্যাপারে মান্নানেরা কৌশলগত নীরবতা নিয়েছেন। বিরোধী দলনেতার কথায়, ‘‘দল ছেড়ে গিয়েও অনেকেই যোগাযোগ রাখছেন। আর বিজেপির সুবিধা হয়ে যায়, এমন কোনও কাজ আমরাও তো করব না।’’ প্রসঙ্গত, কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল ঘুরে দুলাল বর, তুষার ভট্টাচার্য বা শম্পা দরিপার মতো কেউ কেউ আবার বিজেপিতে পা বাড়াচ্ছেন। পরিষদীয় মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলছেন, পুরনো দলে কেউ ফিরতে চান, এমন খবর তাঁদের কাছে নেই।

বামেদের সঙ্গে সমঝোতা করে তিন বছর আগে বিধানসভা ভোটে ৪৪টি আসন জিতেছিল কংগ্রেস। বিধানসভার চলতি অধিবেশনে মাথা গুনতি করে কংগ্রেসের বিধায়ক পাওয়া গিয়েছে ২৫ জন। এর মধ্যে নোয়াপাড়ায় কংগ্রেস বিধায়কের মৃত্যুতে এবং সবং, ইসলামপুর, নওদা ও কান্দিতে দলত্যাগীরা ইস্তফা দেওয়ায় উপনির্বাচন হয়েছে। কেবল কান্দি জিতে দখলে রেখেছে কংগ্রেস, বাকি চারটি তৃণমূল জিতে নিয়েছে। তিন বছর আগে বামফ্রন্ট জিতেছিল ৩৩টি আসন। এখন সিপিএমের বিধায়ক ২১ জন, বাকি শরিকদের ৬। তবে দলত্যাগী বিধায়কদের সিপিএম বহিষ্কার করে দেওয়ায় তাঁদের সম্পর্কে কৌশলী অবস্থান নেওয়ার সুযোগ দলের নেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement