সাক্ষাৎ: রবিবার ভাবাদিঘিতে গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলছেন ‘আক্রান্ত আমরা’র সদস্যরা। ছবি: মোহন দাস
ভাবাদিঘি যাওয়ার পথে শনিবার গোঘাটের উল্লাসপুরে আক্রান্ত হয়েছিলেন সিপিএমের আইনজীবী নেতা বিকাশ ভট্টাচার্য এবং ‘সেভ ডেমোক্রেসি’র সদস্যেরা। তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা তাঁদের আটকে মারধর করে বলে অভিযোগ ওঠে। রবিবার অবশ্য পুলিশি নিরাপত্তায় নির্বিঘ্নেই ভাবাদিঘি গিয়ে দিঘিটি বাঁচাতে মিছিল করলেন ‘আক্রান্ত আমরা’র প্রতিনিধিরা।
বিকাশবাবুদের উপরে হামলার ঘটনায় রবিবার রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তবে, ওই ঘটনাকে ঘিরে উল্লাসপুর এবং ভাবাদিঘিতে উত্তেজনা রয়েছে। রবিবার দুপুরে ‘আক্রান্ত আমরা’র প্রতিনিধিরা গ্রামের শিবমন্দির চত্বরে পৌঁছতেই আন্দোলনকারীরা ভিড় করেন। সংগঠনের পক্ষে অম্বিকেশ মহাপাত্র আন্দোলনে সামিল হওয়ার আশ্বাস দিয়ে জানান, দিঘিটি রক্ষার দাবি নিয়ে তাঁরা দিল্লি পর্যন্ত যাবেন। ভাঙড় থেকে ভাবাদিঘি— কোনও জুলুম মানা হবে না।
তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে ভাবাদিঘিকে ঘিরে জট কিছুতেই কাটছে না। রেল ওই দিঘির একাংশ বুঝিয়ে রেললাইন পাততে চায়। কিন্তু আন্দোলনকারীদের দাবি, দিঘিতে হাত না দিয়ে তার উত্তর দিকের জমি দিয়ে রেললাইন পাতা হোক। এই টানাপড়েনেই মাসখানেক ধরে পরিস্থিতি জটিল হয়েছে। আন্দোলনকারীদের আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্যই শনিবার বিকাশবাবুকে নিয়ে ভাবাদিঘি আসছিলেন ‘সেভ ডেমোক্রেসি’র সদস্যেরা।
অম্বিকেশবাবু ছাড়াও এ দিন ‘আক্রান্ত আমরা’র পক্ষে ভাবাদিঘি আসেন অরুণাভ গঙ্গোপাধ্যায়, প্রতিমা দত্ত। আন্দোলনকারীরা তাঁদের কাছে শাসকদলের অত্যাচার চালানোর অভিযোগ তোলেন। তার পরেই দিঘি বুজিয়ে রেলপথ তৈরির বিরোধিতা করে আন্দোলনকারীদের নিয়ে মিছিল করেন অম্বিকেশবাবুরা। দু’টি মানবাধিকার মঞ্চও এ দিন ভাবাদিঘি গিয়ে আন্দোলনকারীদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেয়।
ওই সব সংগঠন অহেতুক জলঘোলা করে গ্রামে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করতে আসছে বলে অভিযোগ তুলেছেন গোঘাটের তৃণমূল বিধায়ক মানস মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘কিছুদিন আগে দলের পক্ষ থেকে মুকুল রায় এসে জানিয়ে গিয়েছেন, ভাবাদিঘির একজন মানুষেরও আপত্তি থাকলে রেলের প্রকল্প হবে না বলে রাজ্য সরকার ঠিক করেছে। ভাবাদিঘির মানুষ নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেবেন।’’