Snake Bite

সাপের ছোবল! দু’সপ্তাহে মা, মেয়েকে হারালেন পরিযায়ী

শোকের মধ্যেও আলাদা একটি ঘরে নিভৃতবাসে ছিলেন গোপাল। শনিবার রাতে ফের গোপালের মা শঙ্করীকে ছোবল মারে একটি কালচিতি সাপ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২০ ০২:৩৭
Share:

প্রতীকী ছবি

করাল করোনা। ছোবল লকডাউনের। ছোবল সাপেরও। দু’সপ্তাহের মধ্যে মা আর মেয়েকে হারালেন এক পরিযায়ী শ্রমিক।

Advertisement

পাঁশকুড়ার মাইশোরা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার রাজশহর গ্রামে বাসিন্দা গোপাল সিং পেশায় মার্বেল পাথর বসানোর মিস্ত্রি। কাজ করতেন মহারাষ্ট্রের পুনেতে। আটকে পড়েছিলেন লকডাউনে। গত ১ জুন বাড়ি ফেরেন তিনি। ঘরে ফিরে দেখেন, তাঁর মেয়ের নিথর দেহ ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন পড়শিরা। গোপালের স্ত্রী ঝর্না জানিয়েছেন, গত ৩১ মে তাঁদের মেয়ে সুনীতা সিংহের পিঠে ছোবল দেয় একটি কালচিতি সাপ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় প্রথম শ্রেণির পড়ুয়া সুনীতাকে। পরের দিন সকালে মৃত্যু হয় তার। করোনায় অনিশ্চিত রুজি। এই অবস্থায় ঘরে ফিরেই মেয়ের মৃত মুখ দেখেন গোপাল। বুকে পাথর রেখে মেয়ের সৎকার করেন বাবা।

শোকের মধ্যেও আলাদা একটি ঘরে নিভৃতবাসে ছিলেন গোপাল। শনিবার রাতে ফের গোপালের মা শঙ্করীকে ছোবল মারে একটি কালচিতি সাপ। পরিবারের সদস্যদের দাবি, সাপটিকে তাঁরা দেখেছিলেন। কিন্তু শঙ্করীর পায়ের ক্ষতস্থান দেখেন তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন না, ওই কালচিতি সাপটিই তাঁকে ছোবল মেরেছে কি না। রবিবার সকাল হতেই বাড়িতেই মৃত্যু হয় শঙ্করীর। দু’সপ্তাহের মধ্যে মা ও মেয়েকে হারিয়ে কার্যত বাকরুদ্ধ গোপাল। তিনি বলেন, ‘‘অনেকদিন পর বাড়ি ফিরে এসে পরিবারের সবাইকে নিয়ে আনন্দে থাকব ভেবেছিলাম। সব শেষ হয়ে গেল। দু’সপ্তাহের মধ্যে মা ও মেয়েকে হারালাম।’’ স্থানীয় পঞ্চায়েতের উদ্যোগে দেহ সৎকারের সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়। মাইশোরা গ্রাম পঞ্চায়েতের পর্যবেক্ষক আফজল শা বলেন, ‘‘ওই পরিবার যাতে সরকারি ক্ষতিপূরণ পায় সে ব্যাপারে বিডিওর সাথে কথা বলেছি।বন দফতরকে জানানো হয়েছে। ওই বাড়ি বা তার আশেপাশে সাপ থাকলে ধরার ব্যবস্থা করা হবে। ওই এলাকাতে পঞ্চায়েতের উদ্যোগে ব্লিচিং ছড়ানো ও কার্বোলিক অ্যাসিড স্প্রে করা হবে।’’

Advertisement

পরিবারের সাথে কথা বলে জানা গিয়েছে, দু’টি ঘটনাতেই ওই পরিবারের লোকজন শোওয়ার সময় মশারি টাঙাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন