thief

মন্দিরে বেহুঁশ ‘চোর’, বাড়ছে ভক্ত

ভোট-প্রচারের বাজারে মাইশোরার পশ্চিম বাকুলদা গ্রামের সোমবার এই ঘটনায় বেশ সাড়া পড়েছে এলাকায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২১ ০৬:০২
Share:

বিকেলে মন্দির চত্বরে শীতল। নিজস্ব চিত্র

সাত সকালে মন্দিরের দরজা খুলেই চক্ষু চড়কগাছ সেবায়েতের। মা শীতলার বিগ্রহের পায়ের কাছে বেঁহুশ অবস্থায় পড়ে এক যুবক! সেবা-শুশ্রূষার পরে জ্ঞান ফিরতেই সেই যুবক বলছেন— ‘‘আর এমন করব না।’’

Advertisement

ভোট-প্রচারের বাজারে মাইশোরার পশ্চিম বাকুলদা গ্রামের সোমবার এই ঘটনায় বেশ সাড়া পড়েছে এলাকায়। দাবি করা হচ্ছে, চুরি করতে এসে কোনও কারণে ওই যুবক অচৈতন্য হয়ে পড়েছিলেন। আর এ নিয়ে এলাকায় রটে যায় যে, দেবীর মহিমাতেই ‘চোর’ বেহুঁশ হয়ে পড়েছে। বিষয়টি জানাজানি হতেই আশেপাশের গ্রাম থাকে কাতারে কাতারে দেবীর দর্শনে মন্দিরে আসছেন ভক্তেরা।

স্থানীয় সূত্রের খবর, পাঁশকুড়ার পশ্চিম বাকুলদা গ্রামের চক্রবর্তী পাড়ায় রয়েছে একটি বহু পুরনো শীতলা মন্দির। আপাতত নতুন মন্দির তৈরির কাজ চলছে। তাই অস্থায়ীভাবে বানানো মন্দিরে দেবীর বিগ্রহ রেখে পুজো চলছে। মন্দিরে সেবায়েতের দায়িত্বে রয়েছেন স্থানীয় শক্তিপদ চক্রবর্তী, লক্ষ্মীনারায়ণ চক্রবর্তী, শঙ্কর চক্রবর্তী, আনন্দ চক্রবর্তী ও জগৎময় চক্রবর্তী নামে পাঁচজন পুরোহিত।

Advertisement

এ দিন সকালে মন্দিরে পুজোরর জন্য এক সেবায়েত এসে দেখেন এক যুবক ভিতরে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। সকলে মিলে তাকে তুলে চোখে মুখে জল দিতে শুরু করেন। বেশ কিছুক্ষণ শুশ্রূষার পর চোখ খোলেন ওই যুবক। জানান, তাঁর নাম শীতল দোলুই। পাশের দাসীবাড় গ্রামে বাড়ি। কেন রাতে তিনি মন্দিরে ঢুকেছিলেন, তা জানতে চাওয়া হলে শীতল বলতে থাকেন, তিনি এমন আর করবেন না।

সেবায়েতদের দাবি, চুরির উদ্দেশ্যেই শীতল মন্দিরে ঢুকেছিলেন। আনন্দ চক্রবর্তী নামে মন্দিরের এক সেবাইত বলেন, ‘‘চুরি করার উদ্দেশ্যেই ওই যুবক মন্দিরে ঢুকেছিলেন। আমাদের বিশ্বাস জাগ্রত দেবী মা তাঁর ক্ষমতা বলে ওকে বেহুঁশ করে দেন।’’ এদিকে, শীতলও দাবি করছেন, বিগ্রহ ছোঁয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি অচৈতন্য হয়ে যান। কেন শীতল অচৈতন্য হয়ে গিয়েছিলেন, তাঁর কোনও শারীরিক অসুস্থতা রয়েছে কি না, তা জানার জন্য অবশ্য কোনও চিকিৎসকের কাছে নিয়ে পরীক্ষা করানো হয়নি।

ঘটনার পরেই ভক্তের সমাগম বেড়েছে মন্দিরে। শুরু হয় পুজোপাঠ। গাছে মাইক বেঁধে বাজানো হয় ভক্তিগীতি। ধরে পড়ার পরে শীতলের ভক্তি দেখে অবাক হন সেবায়েতরাও। মারধর তো দূরের কথা, সারাদিন তাঁর খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা হয় চক্রবর্তী বাড়িতেই। শীতলের জন্য নতুন ধুতির ব্যবস্থা করে দেন সেবায়েতরা। আর সেই ধুতির কোঁচা গলায় জড়িয়ে সারা দিন বিগ্রহের সামনে বসে রইলেন শীতল। শুধু বিড় বিড় করে বলছিল, ‘‘আমি এমন আর করব না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন