সাবেক শাড়িতেই বাজিমাত

দোকানে গোটা তিনেক শাড়ি গায়ে ফেলে দেখছিলেন প্রেয়সী। কিন্তু মনে ধরছিল না। দোকানদারও কিছুটা অপ্রস্তুত। কিন্তু তারপর মায়ের হাত থেকে একটা লাল মাহেশ্বরী গায়ে ফেলেই দিল খুশ প্রেয়সীর। হাঁফ ছাড়লেন দোকান মালিকও।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:০৭
Share:

মনপসন্দ শাড়ির খোঁজ। মেদিনীপুরের দোকানে। —নিজস্ব চিত্র।

দোকানে গোটা তিনেক শাড়ি গায়ে ফেলে দেখছিলেন প্রেয়সী। কিন্তু মনে ধরছিল না। দোকানদারও কিছুটা অপ্রস্তুত। কিন্তু তারপর মায়ের হাত থেকে একটা লাল মাহেশ্বরী গায়ে ফেলেই দিল খুশ প্রেয়সীর। হাঁফ ছাড়লেন দোকান মালিকও।

Advertisement

রোজদিনের জিনস-টপ-কুর্তির ভিড় ঠেলে পুজোয় একটু আলাদা হতে চাওয়া নতুন নয়। আর কাজের চাপের ফাঁকে এই কয়েকটা দিন চোখ সেই শাড়ির তাকে! নানা প্রদেশের শাড়ির দিকে মেয়েদের টান সেই কবে থেকেই। পুজো এলে দোকানে আসে নতুন স্টক। শাড়ির মধ্যেও ঐতিহ্য আর আধুনিকতার মেলবন্ধন খোঁজে আঠেরো থেকে আটচল্লিশ- সকলেই।

এ বার শাড়ির বাজার মাতাচ্ছে পাট্টু সিল্ক আর মাহেশ্বরী। মেদিনীপুরের ফ্যাশন ডিজাইনার দেবযানী ঘোষের কথায়, “এ বার সবথেকে বেশি চলছে পাট্টু সিল্ক আর মাহেশ্বরী। আর কটনে চলছে খেস।’’ পাট্টু সিল্ক দক্ষিণ ভারতের শাড়ি। দোপিয়ান আর কাঞ্জিভরম মিশিয়ে নতুন এই শাড়ি। শহরের এক বস্ত্র বিপণির কর্ণধার বলছিলেন, ‘‘আসলে পুজোর সময় সকলেই চায়, তিনি যে শাড়িটা পরবেন, সেটা যেন আলাদা হয়। বুটিক সেই পথ দেখাচ্ছে!”

Advertisement

পুজোর দিনগুলোয় সকালে অনেকেই পছন্দ করেন হাল্কা রঙের শাড়ি। আর রাতে জমকালো রঙের শাড়ি। অষ্টমীতে অনেকের পছন্দ তাঁতের শাড়ি। বস্ত্র ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, দোকানে বিভিন্ন ধরণের ক্রেতা আসেন। বেনারসী- বালুচরী তো রয়েছেই, কেউ কেউ ঢাকাই-কাঁথাস্টিচ খোঁজেন। কেউ আবার মণিপুরী জুট সিল্ক বা বাংলার তাঁত। কারও পছন্দ কাজ করা সাবেক সুতির শাড়ি।

শহরের বাসিন্দা নিবেদিতা রায়, অস্মিতা পালরা বলছেন, ‘‘শাড়ির ব্যাপারে মেয়েরা বরাবরই খুঁতখুঁতে! জিন্স-টপ-কুর্তি তো বছরের অন্য সময় রয়েছে। পুজোর ক’দিন শাড়ি চাই-ই চাই!” দামও খুব বেশি নয়। দেড় হাজার থেকে আড়াই-তিন হাজারের মধ্যে ভাল ভাল শাড়ি মিলছে। বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, অন্যান্য শাড়ির মধ্যে এ বার ভাল চলছে মঙ্গলগিরি, মধুবনি সিল্ক প্রভৃতি। খুব কটকটে রঙ নয়, অনেক ক্রেতারই পছন্দ হালকা রঙের শাড়ি। তবে অন্যান্য বছরের থেকে এ বার বেশি চলছে দেশের বিভিন্ন প্রদেশের শাড়ি। বাংলার শান্তিপুরি, বেগমপুরী, ধনেখালি, টাঙ্গাইল, অন্ধ্রপ্রদেশের তেলিয়া কটন, ইক্কত, জয়পুরের হ্যান্ড ব্লক প্রিন্টেড শাড়ি, ঝাড়খণ্ডের তসর ও মটকা, জয়পুর-গুজরাতের নানা রঙের ছাপা শাড়ি, চেন্নাইয়ের চেট্টিনাড, কলমকারি ও চান্দেরি শাড়ি। শহরের দোকানগুলোয় নতুন নতুন কালেকশনের সঙ্গে বিকোচ্ছে তাঁত, বালুচরী, তসর।

শাড়িতে বাঙালি কন্যেদের পুজো জমজমাট হয়ে ওঠা সময়ের অপেক্ষা!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন