লন্ডভন্ড বিএড কলেজের অফিস ঘর।
রাতের অন্ধকারে বেসরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রশাসনিক ভবন থেকে নগদ টাকা-সহ লক্ষাধিক টাকার সামগ্রী নিয়ে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। রবিবার রাতে খড়্গপুর গ্রামীণের মাতকাতপুরের ঘটনা। সোমবার সকালে কলেজের ক্যান্টিনের কয়েকজন কর্মী প্রশাসনিক ভবনের দরজা খোলা দেখেন। তখনই চুরির বিষয়টি জানাজানি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রথমে পুলিশ অভিযোগ নিতে না চাইলেও পরে তা গ্রহণ করে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে চুরির কারণ খতিয়ে দেখা হবে।
খড়্গপুর গ্রামীণের চৌরঙ্গী থেকে মেদিনীপুর যাওয়ার পথে সতকুই সংলগ্ন ওই এলাকায় প্রায়ই চুরি-ছিনতাইয়ের অভিযোগ ওঠে। এমনকী ওই রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে ছিনতাইয়ের অভিযোগও মাঝে-মধ্যেই শোনা যায়। ২০০৩ সালে মাতকাতপুরে এই বেসরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু গড়ে ওঠে। ওই কলেজে বি.এডের পাশাপাশি পিটিটিআই-এরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, গত ১১ এপ্রিল পড়ুয়াদের নিয়ে শিক্ষামূলক ভ্রমণে সিকিমের গ্যাংটকে গিয়েছেন কলেজের শিক্ষকেরা। তাই এখন কলেজ ছুটি রয়েছে। পড়ুয়াদের হস্টেলও বন্ধ থাকায় ফাঁকাই রয়েছে কলেজ। কলেজে রাতে পাহারায় থাকেন দু’জন কেয়ারটেকার। রবিবার রাতেও ছিলেন ওই দুই কেয়ারটেকার। সোমবার সকালে ক্যান্টিনের কর্মীরা এসে দেখেন, প্রশাসনিক ভবনের সদর দরজা খোলা। কিছুটা দূরে অন্য একটি ভবনে ঘুমোচ্ছিলেন দুই কেয়ারটেকার। এরপর প্রশাসনিক ভবনে ঢুকে দেখা যায়, কলেজ সম্পাদক ও প্রশাসনিক আধিকারিকের অফিস ঘর লণ্ডভণ্ড হয়ে রয়েছে। কলেজের প্রশাসনিক আধিকারিককে ফোনে খবর দেওয়া হয়। তিনিই পুলিশে খবর দেন।
কলেজ সূত্রে দাবি, গত ১০ এপ্রিল কলেজ পড়ুয়াদের জমা দেওয়া বেতনের টাকা প্রশাসনিক ভবনেই রাখা ছিল। দুষ্কৃতীরা সেখান থেকে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছে। এ ছাড়াও অফিসঘরের দু’টি ল্যাপটপ ও দু’টি প্রজেক্টরও চুরি গিয়েছে। কলেজের তরফে অমিতাভ শতপথী নামে এক শিক্ষক থানায় গেলে পুলিশ অভিযোগ নেয়নি। পরে অবশ্য পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করে। গ্যাংটক থেকে ফোনে কলেজের প্রশাসনিক আধিকারিক আরণ্যক আচার্য বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। আমাদের এক শিক্ষক থানায় অভিযোগ জানাতে গেলেও পুলিশ অভিযোগ নিয়ে চায়নি।’’ তাঁর দাবি, তিনি পরে রাজ্যের এক মন্ত্রীকে ফোন করেন। পরে পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করে। তাঁর আশা, পুলিশ দ্রুত তদন্ত করে ঘটনার কিনারা করবে। যদিও অভিযোগ নিতে না চাওয়ার দাবি অস্বীকার করেছে পুলিশ।
অন্য দিকে এ দিনের চুরির ঘটনায় কেয়ার-টেকারদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে গ্রামীণ থানার পুলিশ। আরণ্যক আচার্যের কথায়, “কেয়ারটেকারদের আমরা এই ঘটনায় সন্দেহ করছি না।’’ তিনি বলেন, ‘‘কলেজের সঙ্গে জড়িত এমন কেউ যে কলেজের গতিবিধি জানে সেই এই কাজ করেছে বলে মনে হচ্ছে। তাই কিছু নথি খোওয়া যাওয়ার আশঙ্কাও করছি। তবে আমরা গ্যাংটক থেকে ফিরলে সবটা বুঝতে পারব। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে দেখুক।’’