একদিনেই জমা ৫২ লক্ষ! নোট গুনতে হিমসিম খেলেন কর্মীরা! অফিস বন্ধ করতে করতে রাত হয়ে গেল! ছবিটা মেদিনীপুর আরটিও অফিসের।
দফতরের এক কর্তার স্বীকারোক্তি, “শেষ কবে একদিনে এত টাকা জমা পড়েছিল মনে করতে পারছি না!” তাঁর মন্তব্য, “এত টাকা। গুনতে তো সময় লাগবেই!” শুক্রবার অফিস বন্ধ করতে করতে যে রাত হয়ে গিয়েছিল তা মানছেন জেলার এআরটিও অমিত দত্ত। তাঁর কথায়, “সব দিন কী আর একই সময় অফিস বন্ধ করা যায়! ওই দিন অনেকে বকেয়া করের টাকা জমা দিয়েছেন। তাই সব কাজ সেরে অফিস বন্ধ করতে একটু সময় লেগেছে।”
গত মঙ্গলবার পাঁচশো ও হাজার টাকার নোট বাতিলের কথা ঘোষণা করা হয়। সরকারি নির্দেশ মেনে শুক্রবারও আরটিও অফিসে এই নোট জমা নেওয়া হয়েছে। বকেয়া করের ক্ষেত্রেই এই নোট নেওয়া হয়েছে। আরটিও অফিসে বিভিন্ন কর জমা নেওয়া হয়। রোড ট্যাক্সের পাশাপাশি রুট পারমিট বাবদ অর্থ নেওয়া হয়। বাস, লরি, পিকআপ ভ্যান-এক এক গাড়ির ক্ষেত্রে এক এক রকম কর নির্দিষ্ট রয়েছে। গাড়ি মালিকেরা কেউ তিন মাস অন্তর কর দেন, কেউ এক বছর অন্তর কর দেন। কর জমা দেওয়ার নির্ধারিত দিন পেরিয়ে গেলে জরিমানা হয়। তখন জরিমানা-সহ বকেয়া কর জমা দিতে হয়।
জেলার কমবেশি সমস্ত সরকারি অফিসেই কর্মী সঙ্কট রয়েছে। আরটিও অফিসেও প্রয়োজনের তুলনায় কর্মী কম। কয়েকটি ক্ষেত্রে দু’-তিনজনের কাজ একজনকে করতে হয়! সাধারণত এখানে দিনে ২০-২২ লক্ষ টাকা কর বাবদ জমা পড়ে। শুক্রবার এই অঙ্কটাই পৌঁছয় ৫২ লক্ষে! দফতরের এক কর্তার কথায়, “কেউ বকেয়া কর দিতে এলে তো ফেরানো যায় না! ওই দিন দুপুরে হুড়মুড় করে বকেয়া করের টাকা জমা পড়তে শুরু করে! সব কাজ গুছিয়ে নেওয়ার জন্যই অফিস রাত পর্যন্ত খোলা রাখতে হয়!”
রাত পর্যন্ত খোলা থেকেছে বহু ব্যাঙ্কও। পাঁচশো এবং হাজার টাকার নোট নিয়ে অনেকেই সকাল থেকে ব্যাঙ্কের সামনে লাইন দিচ্ছেন। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে কেউ কেউ বেশ দুর্ভোগে পড়ছেন। তবে নোট জমা না দিয়ে ব্যাঙ্ক ছাড়ছেন না! নোট জমার হিড়িক ঠিক কেমন? মেদিনীপুরের এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় দিনে সাধারণত কুড়ি লক্ষ টাকা জমা পড়ে। শুক্রবার ওই শাখায় ষাট লক্ষ টাকা জমা পড়েছে। জেলার লিড ডিস্ট্রিক্ট ব্যাঙ্ক ম্যানেজার (এলডিএম) শক্তিপদ পড়্যা বলেন, “এখন ব্যাঙ্কগুলোয় বেশি টাকাই জমা পড়ছে। লাইন থাকছে। তবে গ্রাহকেরা সব রকম সহযোগিতা করছেন। তাই কোনও সমস্যা হচ্ছে না।”