প্রতীকী ছবি।
পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের বাধায় বিরোধী দলের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি, রাজ্য জুড়েই এমন অভিযোগ উঠেছে। তার মধ্যেই কিছু ক্ষেত্রে শাসক ও বিরোধী দু’তরফেই একই পরিবার থেকে একাধিক মনোনয়নের নজির দেখা গিয়েছে। কিন্তু গ্রাম পঞ্চায়েতে একই আসনে স্বামী-স্ত্রী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন, এমন অভিনব ঘটনা ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরে।
নন্দকুমার ব্লকের সাওড়াবেড়িয়া জালপাই-১ গ্রামপঞ্চায়েত আসনে তৃণমূলের প্রার্থীপদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান মানস হাজরা, তাঁর স্ত্রী মৈত্রেয়ী হাজরা ও মানসবাবুর দাদা বিশ্বনাথ হাজরা। ওই আসনেই নির্দল হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন সুশান্ত হাজরা। তিনি গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য কল্পনা জানা হাজরার স্বামী। পঞ্চায়েতে একই আসনে দলীয় প্রার্থী হিসাবে স্বামী-স্ত্রীর মনোনয়ন জমা নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। নন্দকুমারের ব্লক তৃণমূল সভাপতি ও বিধায়ক সুকুমার দে বলেন, ‘‘গ্রাম পঞ্চায়েতে একটি দলের প্রার্থী হিসেবে একই আসনে মানসবাবু, তাঁর স্ত্রী ও দাদার মনোনয়ন জমা দেওয়ার বিষয়টি নজরে এসেছে।
মানসবাবু আমাদের না জানিয়েই এটা করেছেন। তবে ওই আসনে কে প্রার্থী হবেন তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।’’
২০১৩ সালের নির্বাচনে এই পঞ্চায়েত দখল করে তৃণমূল। পঞ্চায়েত প্রধান হন মানস হাজরা। উপ-প্রধান হন নমিতা বর্মন। কিন্তু একশো দিনের কাজের প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় প্রধান পদ থেকে অপসারিত হন মানসবাবু। ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে দ্বায়িত্ব নিয়েছিলেন নমিতাদেবী। এ নিয়ে গোষ্ঠীকোন্দল চরমে ওঠে। এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিকিট না পেয়ে পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনে নির্দল হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন নমিতাদেবী।
তবে একই আসনে স্বামী-স্ত্রীর মনোনয়ন জমা নিয়ে মানসবাবুর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে আমাদের তিনজনের মনোনয়ন জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত আমার নিজের। এ বিষয়ে দলের ব্লক নেতৃত্বকে কিছু জানাইনি। তবে প্রার্থী কে হবে তা নিয়ে দলীয় নেতৃত্ব যা সিদ্ধান্ত নেবেন, মেনে নেব।’’ দলের একাংশের মতে, আর্থিক দুর্নীতিতে অভিযুক্ত মানসবাবু নিজে টিকিট না পেলেও যাতে স্ত্রী বা দাদা ওই আসনে প্রার্থী হিসেবে থাকতে পারেন সেজন্যই এই কৌশল নিয়েছেন।