পয়লা বৈশাখের বিকেল। মেদিনীপুর গ্রামীণের হোসনাবাদ থেকে তৃণমূলের মিছিল বেরিয়েছে। পৌঁছবে ধর্মা পর্যন্ত। নির্বাচনী প্রচার মিছিলে সামিল হয়েছেন পঞ্চায়েতের প্রার্থীরা। পুরোভাগে বিধায়ক দীনেন রায়। মিছিল এগোচ্ছে। পথচলতি মানুষকে লাড্ডু বিলোচ্ছেন বিধায়ক। তৃণমূলের প্রচার মিছিল থেকে লাড্ডু বিতরণ কেন? দীনেনবাবু বলছিলেন, “আজ নববর্ষ। তাই সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি। মিষ্টিমুখ করিয়েছি।” বিধায়কের কথায়, “পয়লা বৈশাখটা একটু অন্য রকমই। যেন বাঙালির নিজস্ব আঙ্গিকে বাঁধা।”
রবিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী প্রচার মিছিল হয়েছে। মিছিল করেছে শাসক, বিরোধী উভয়ই। এ দিন ঘাটালে মহিলাদের নিয়ে মিছিল করে শাসক দল। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতিও সকাল থেকে জনসংযোগ সেরেছেন। অজিতবাবু জেলা পরিষদে প্রার্থীও হয়েছেন। সকালে নিজের এলাকায় প্রচার সারেন। পরে মেদিনীপুর সহ অন্য এলাকায় যান। অজিতবাবু বলছিলেন, “যেখানেই গিয়েছি, সকলকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছি।” শুভেচ্ছা জানিয়েছে বিরোধীরাও। বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশের কথায়, “সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকায় প্রচার কর্মসূচি হয়েছে। প্রচার কর্মসূচি থেকে নববর্ষের শুভেচ্ছাও জানানো হয়েছে।” অবশ্য সর্বত্র সমান প্রচার হয়নি। নববর্ষের দিনে যে ভাবে গ্রামেগঞ্জে প্রচার হওয়ার কথা ছিল তা হয়নি। কেন? বিভিন্ন মহল মনে করছে, আদালতের নির্দেশে নির্বাচন প্রক্রিয়া স্থগিত হয়েছে। তাই প্রচারের গতিও শ্লথ।
তৃণমূলের এক জেলা নেতা মানছেন, “এদিন যে ভাবে প্রচার হওয়ার কথা ছিল তা হয়নি। আসলে নির্বাচনের ব্যাপারে কোথাও যেন একটা অনিশ্চয়তা চলে এসেছে।” গড়বেতা, শালবনি, কেশপুর- বিভিন্ন এলাকায় কমবেশি প্রচার হয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশ কিছু এলাকায় এ বার সেয়ানে- সেয়ানে লড়াই হবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। এখন সব দলের প্রচার কর্মসূচিগুলোয় কমবেশি লোকজন থাকছেন। তুলনায় শাসক- শিবিরের কর্মসূচিতে ভিড় বেশি। অবশ্য মিটিং- মিছিলের ভিড় দেখে আঁচ করা যায় না যে ভোট- সমর্থন কোন দিকে ঝুঁকবে! জেলার এক বিজেপি নেতার কথায়, “এখন তৃণমূলের কত ভাষণ! ভোটের পরে যখন ফলাফলটা বেরোবে তখন বুঝবে! প্রচারের ভিড় ভোটে থাকবে না!” এ দিন কোথাও কোথাও খাওয়াদাওয়ারও বন্দোবস্ত ছিল!