প্রতীকী ছবি।
পরিজন যাতে করোনা সংক্রমিত না হন, সে জন্য ভিন্ রাজ্যে থেকে অনেকেই সরকারি নিভৃতবাস কেন্দ্র বা স্থানীয় স্কুলে থাকছেন। কিন্তু সরকারি নিভৃতবাস কেন্দ্রের হাল দেখে রামনগরে কে কেউ নিজের বাড়িতেই ফিরে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ বিজেপি’র। এ নিয়ে তারা স্থানীয় প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, রামনগর-১ ব্লকের গোবরা গ্রাম পঞ্চায়েতের হীরাপুর গ্রামের এক বাসিন্দা সপ্তাহ দুয়েক আগে মহারাষ্ট্র থেকে ফিরেছেন। তাঁকে সরকারি উদ্যোগে স্থানীয় দিঘা দ্বিজেন্দ্রলাল হাইস্কুলের পাশে একটি ফ্ল্যাড রেসকিউ সেন্টারে নিভৃতাবাসে রাখা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে শৌচালয় এবং প্রস্রাবাগার ঠিকমত পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয় ওই কোয়রান্টিন সেন্টারে যে বাসনপত্র রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয়, তাতে কুকুর এসে মুখ দেয় বলেও অভিযোগ।
আবর্জনা ভর্তি নিভৃতবাস কেন্দ্রের ছবি তুলে সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন মহারাষ্ট্র ফেরত ওই শ্রমিক। তিনি বলেন, ‘‘কিডনির অসুখ রয়েছে। ওখানে যেভাবে থাকার ব্যবস্থা ছিল, তাতে এমনই অসুস্থ হয়ে পড়তাম। তাই বাড়ি ফিরেছি। ছোট বাচ্চাদের আত্মীয় বাড়িতে পাঠিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা ঘরে নিভৃতাবাসে থাকছি।’’ মঙ্গলবার ওই শ্রমিকের নিভৃতাবাসে থাকার মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু এখনও তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি বলে দাবি শ্রমিকের।
নিভৃতবাস কেন্দ্রের অপরিচ্ছন্ন অবস্থার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরে কয়েকদিন আগে ওই কেন্দ্রে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বিজেপি কর্মীরা। সম্প্রতি তাঁরা রামনগর-১ এর বিডিও’র কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। রামনগর-১ ব্লকের পশ্চিম মণ্ডল মহিলা মোর্চার নেত্রী তাপসী বেরা বলেন, ‘‘চরম অব্যবস্থাপনায় ওই কোয়রান্টিন সেন্টার চালানো হচ্ছিল। ব্লক প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করার পরেই সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এমন পরিস্থিতিতে ওই পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ি ফিরতে বাধ্য হন।’’
ভিন্ রাজ্য বিশেষত মহারাষ্ট্র, গুজরাত ফেরতদের উপরে বিশেষ নজর দেওয়ার কথা বলেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু রামনগরের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতা নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। এ প্রসঙ্গে বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি তপন মাইতি বলেন, ‘‘বিডিওকে সরকারিভাবে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওযার দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।’’
সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নিভৃতবাস কেন্দ্রের ছবি প্রসঙ্গে রামনগর-১ এর বিডিও বিষ্ণুপদ রায় বলেন, ‘‘ওটা কিছুদিন আগের তোলা ছবি, ভিডিয়ো। বিষয়টি জানার পর ওই নিভৃতবাস কেন্দ্রটিকে বদল করা হয়েছে। বর্তমানে অন্য জায়গায় রাখা হচ্ছে ভিন্ রাজ্য ফেরতদের।’’