স্রোত: বাঁধভাঙা জল ঢুকছে চন্দ্রকোনার কলাকোড়ি গ্রামে। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
ফের ভাঙল বাঁধ, ফের জলমগ্ন ঘাটাল। জলের দখলে চলে গিয়েছে ক্ষীরপাই-চন্দ্রকোনা সড়কটিও।
রবিবার চন্দ্রকোনার কালাকড়ি ও খামারবেড়া— দু’টি গ্রামে শিলবতীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়ে পড়েছে বহু গ্রাম। জল ঢুকেছে ঘাটাল শহরের ১২টি ওয়ার্ডেও। সব মিলিয়ে ফের চরম সমস্যায় ঘাটালের বাসিন্দারা। যদিও ঘাটালের মহকুমা শাসক পিনাকীরঞ্জন প্রধানের আশ্বাস, “উদ্বেগের কারণ নেই। আকাশ পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। নতুন করে জল ছাড়ারও খবর নেই।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, অতিবৃষ্টি সঙ্গে জলাধার থেকে জল ছাড়ার ফলেই ফের জলমগ্ন হয়ে পড়ল ঘাটাল শহর সহ ব্লকের ২০-২২টি গ্রাম। বাঁধ ভেঙে চন্দ্রকোনা-১ ব্লকের মনোহরপুর-১ পঞ্চায়েত ও চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের বসনছড়া পঞ্চায়েতের কালাকড়ি, নাড়ুয়া, আগনা, পান্ডুয়া, কেলেমি, পাইকপাড়া, নিশ্চিন্তপুর-সহ প্রায় ১৫-২০টি গ্রাম জলের তলায় চলে গিয়েছে।
শনিবার সকাল থেকেই জল বাড়ছিল ঘাটালের শিলাবতী, কেঠিয়া, কংসাবতী, ঝুমি-সহ অন্য নদীগুলিতে। রবিবার সকালে ঘাটাল পুর এলাকার ১২টি ওয়ার্ডে জল ঢুকে পড়ে। সঙ্গে ঘাটাল ব্লকের অজবনগর-১ ও ২, বীরসিংহ ও মনসুকা-১ পঞ্চায়েতের বহু গ্রামও চলে যায় জলের তলায়। ওই সব এলাকার আমন ধান-সহ বিভিন্ন আনাজ খেত জলমগ্ন। জলের দখলে রাস্তা, পানীয় জলের কলও।
গত জুলাইয়ে ঘাটালে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। কালীপুজোর আগে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের জেরে ফের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ায় চরম দুর্ভোগে বাসিন্দারা। বিপর্যস্ত স্বাভাবিক জনজীবন।
পুরসভা সূত্রের খবর, শনিবার রাত থেকেই শহরের শুকচন্দ্রপুর, গম্ভীরনগর, চাউলি, রামচন্দ্রপুর, দুধেরবাঁধ, সিংহপুর-সহ ১২টি ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বিপাকে কালীপুজো উদ্যোক্তারাও। শনিবারই উঁচু জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে প্রতিমা। পরে বিসর্জন হবে।
ক্ষীরপাই সংলগ্ন মনসাতলা চাতালে জল উঠেছে শনিবার বিকেল থেকেই— বন্ধ ক্ষীরপাই-চন্দ্রকোনা সড়কে যান চলাচল। রবিবারও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। পর্যাপ্ত নৌকার বন্দোবস্তও করতে পারেনি প্রশাসন। অভিযোগ, বাস থেকে নেমে যাত্রীদের দু’আড়াই ঘণ্টা লাইনে দিয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে নৌকার জন্য। ফলে ক্ষোভ বা়ড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
যদিও পূর্ত দফতরের সহকারী বাস্তুকার (ডিগ্রি) অমিত চৌধুরী বলেন, “মনসাতলা চাতালে বেশি সংখ্যক নৌকা দেওয়ার পরিস্থিতি নেই। তাই এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।”