Coronavirus in Midnapore

চিকিৎসকের মৃত্যু রেলশহরে

স্বাস্থ্য  দফতর সূত্রে খবর, সোমবার খড়্গপুর শহরে ১২ জন নতুন করে পজ়িটিভ হন। ওই আক্রান্তের মধ্যে থাকা ছোট ট্যাংরার বাসিন্দা রেল হাসপাতালের অবসরপ্রাপ্ত চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ বছর ছিয়াশির এক বৃদ্ধ রাতেই মারা যান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর ও ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২০ ০৩:৪৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

একদিনের স্বস্তি শেষে রেলশহরে ফিরে এল উদ্বেগ। এক চিকিৎসকের মৃত্যু হল সেখানে।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সোমবার খড়্গপুর শহরে ১২ জন নতুন করে পজ়িটিভ হন। ওই আক্রান্তের মধ্যে থাকা ছোট ট্যাংরার বাসিন্দা রেল হাসপাতালের অবসরপ্রাপ্ত চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ বছর ছিয়াশির এক বৃদ্ধ রাতেই মারা যান। রিপোর্ট আসার পরে বাড়িতে আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল তাঁকে। অসুস্থ বোধ করায় নিয়ে যাওয়া হয় রেল হাসপাতালে। সেখানেই মৃত্যু হয়। রেলের চিফ মেডিক্যাল সুপারিন্টে়ন্ডেন্ট এসএ নাজমি বলেন, “অ্যান্টিজেনে করোনা পজ়িটিভ হয়েছিলেন ওই চিকিৎসক। কোমর্বিডিটির জেরে বাড়িতে অসুস্থ হলে হাসপাতালে আনা হয়। আইসিইউতে রাখা সত্ত্বেও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে উনি মারা গিয়েছেন।’’

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রেল হাসপাতালের এক নার্সও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও রেল যোগে সুভাষপল্লির একই পরিবারে ২ জন, দেবলপুরের ১ জন, ইন্দা রেল কোয়ার্টারের ১ জন, ট্রাফিক রেলকলোনির ১ জন, মালঞ্চর বাসিন্দা ১ জন পজ়িটিভ হয়েছেন। এর বাইরে সুভাষপল্লি জনকল্যাণ স্কুল সংলগ্ন এলাকার এক যুবক, দেবলপুরের একই পরিবারের ২ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মহকুমার মধ্যে ডেবরার ১ জন, খড়্গপুর গ্রামীণের ১ জন, পিংলার ৩ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। মঙ্গলবার আবার গুজরাত থেকে গাড়িতে ফেরার পথে মৃত ডেবরার বাসিন্দা এক ব্যক্তির অ্যান্টিজেন রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। এ দিনই সবংয়ের বলপাইয়ের এক বাসিন্দার মৃত্যু পরে জানা গিয়েছে তিনিও পজ়িটিভ ছিলেন।

Advertisement

সবংয়ের ওই ব্যক্তি দিন তিনেক আগে ডেবরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁর মৃত্যুর পরে দেহ ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে গ্রামবাসীদের চাপে সেই দেহ সবং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় জানা যায় তিনি করোনা পজ়িটিভ ছিলেন। সবংয়ের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুভাষ কাণ্ডার বলেন, “ডেবরা হাসপাতাল থেকে সবংয়ে দেহ আসার পরে অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় জানা গিয়েছে বলপাইয়ের ওই মৃত ব্যক্তি করোনা পজ়িটিভ ছিলেন।” ডেবরা হাসপাতাল থেকে মৃতের করোনা পরীক্ষা না করিয়ে কেন দেহ ছাড়া হয়েছিল সেই প্রশ্ন উঠেছে। ডেবরার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আরিফ হাসানের অবশ্য দাবি, “মৃতের বাড়ির লোকেরা জোর করে মৃতদেহ নিয়ে গিয়েছিল। আমরা পরে সবংয়ে দেহের করোনা পরীক্ষা করিয়েছি।”

চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে আবার চিকিৎসক সঙ্কট শুরু হয়েছে। কারণ সেখানে দু’জন স্থায়ী চিকিৎসকের মধ্যে একজন হলেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক (বিএমওএইচ)। যিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে চিকিৎসাধীন। শুধু চিকিৎসক নয়, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীও পর্যাপ্ত নয়। এখন পরিস্থিতি এমনই যে হাসপাতালে রোগী এলেই রেফার করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। প্রসূতিদের ভর্তিতেও অনীহা আছে। অভাব দেখা দিয়েছে নজরদারি ক্ষেত্রেও। রবিবার রাতে চন্দ্রকোনা শহরের এক করোনা আক্রান্তকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেরি হওয়ার পরে বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, চিকিৎসক সঙ্কট আছে এটা ঠিক। কিন্তু চন্দ্রকোনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও তৎপর নয়। জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌমশঙ্কর সারেঙ্গী বলেন, “সমস্যা মেটাতে দু’জন অস্থায়ী চিকিৎসক দেওয়া হয়েছে। স্থায়ী চিকিৎসকও নিয়োগ করা হবে।” সোমবার রাতের রিপোর্টে ঘাটাল মহকুমায় নতুন করে ২৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে দাসপুরের ১৮ জন, ঘাটালের ৩ এবং চন্দ্রকোনার ৬ জন আছেন।

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন