Coronavirus

ত্রাণ বিলি লক্ষ টাকার, আশা কর্মীদের জন্য কত?

অভিযোগ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল লক্ষ লক্ষ টাকা ত্রাণ দিলেও আশা কর্মীরা করোনা বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রাথমিক সামগ্রী মাস্ক, গ্লাভস পর্যাপ্ত পরিমাণে পাচ্ছেন না।  

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মহিষাদল শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২০ ০৪:০৫
Share:

প্রতীকী ছবি

কখনও গৃহস্থের বাড়ি গিয়ে বিলি করা হচ্ছে চাল-ডাল। কখনও আবার মুখ্যমন্ত্রীর আপৎকালীন ত্রাণ তহবিলে দান করা হচ্ছে লক্ষ-লক্ষ টাকা। সমাজ মাধ্যমে সেই বিষয়গুলি নিয়ে দেদার ছবি পোস্ট করা হচ্ছে। লাইকও পড়েছে হাজারে হাজারে। কিন্তু এই মুহূর্তে মাঠে নেমে যুদ্ধ করছেন যাঁরা, সেই ‘সৈনিক’ তথা আশাকর্মীরা কতটা সাহায্য পাচ্ছেন? প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষ, বিরোধী থেকে শুরু করে আশা কর্মীদেরই একাংশ।

Advertisement

জেলায় প্রতিদিনই বাড়ছে আইসোলেশনে যাওয়া মানুষের সংখ্যা। সম্প্রতি ভিন্‌ রাজ্য থেকে ঘরে ফেরা মানুষদের সংখ্যাটাও কম নয়। গৃহ পর্যবেক্ষণে (হোম কোয়রান্টিন) থাকার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। ওই সব বাসিন্দাদের পরিস্থিতি কী, তাঁদের করোনা উপসর্গ দেখা গেল কি না, করোনা সচেতনতায় প্রচার ইত্যাদি কাজগুলি গ্রাম্য পর্যায়ে করছেন আশা কর্মীরা। কিন্তু অভিযোগ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল লক্ষ লক্ষ টাকা ত্রাণ দিলেও আশা কর্মীরা করোনা বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রাথমিক সামগ্রী মাস্ক, গ্লাভস পর্যাপ্ত পরিমাণে পাচ্ছেন না।

সম্প্রতি মহিষাদল ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে তিন লক্ষ ১৫ হাজার টাকা দান করা হয়েছে। সে সব ছবি পোস্ট করা হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। স্বাভাবিক ভাবেই বয়ে গিয়েছে লাইক ও কমেন্টের বন্যা। কিন্তু বাস্তব ছবিটা সে রকম নয়, অভিযোগ এমনটাই। আরও অভিযোগ, নিচুতলার স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রতি উদাসীন শাসক দলের নেতাকর্মীরা। মহিষাদল ব্লকে ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতে আশা কর্মী হিসেবে কাজ করেন প্রায় ১৮০ জন।

Advertisement

আশা কর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, প্রশাসনের নির্দেশ মাফিক তাঁরা হোম কোয়েন্টাইনে থাকা মানুষজনের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন এবং স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিচ্ছেন। কিন্তু তাঁদের স্বাস্থ্যের কী হবে, সে ব্যাপারে মুখ খুলছেন না স্থানীয় নেতৃত্ব। অভিযোগ উঠেছে, এখনও পর্যন্ত অনেক আশা কর্মী প্রয়োজনীয় মাস্ক এবং গ্লাভস পাননি। কয়েকজন পেয়েছেন একটি করে মাস্ক। এ দিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি মাস্ক একবারই ব্যবহার করা যায়। সেক্ষেত্রে একটি মাস্ক ধুয়ে ধুয়ে কোনও রকমে কাজ চালাতে হচ্ছে আশা কর্মীদের। কার্যত ঢাল-তরোয়াল ছাড়াই নিধিরাম সর্দার হয়ে মাঠে নামতে হয়েছে তাঁদের। স্বভাবতই নিজেদের পরিবার নিয়ে চিন্তিত বহু আশা কর্মী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আশা কর্মী বলেন, ‘‘প্রশাসনের নির্দেশে কোয়েন্টাইন থাকা প্রত্যেকের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছি। নিজের সংক্রমণ নিয়ে ভীত নই। কিন্তু আমার থেকে আমার পরিবারেরও সংক্রমণ ছড়ালে, কী হবে— এই নিয়ে চিন্তায় রয়েছি।’’

নিচুতলার স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রয়োজনীয় মাস্ক এবং গ্লাভস্ যোগানের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে, কার্যত স্বীকার করে নিচ্ছেন মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিউলি দাস। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কি নিজে থেকে তহবিলে দিয়েছি? মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছিলেন বলেই তাঁর ত্রাণ তহবিলে টাকা দেওয়া হয়েছে। আর আমরা কিছু আশা কর্মীকে মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার দিয়েছি।’’ বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি নবারুণ নায়ক বলেন, ‘‘আসলে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ভাল সাজার আপ্রাণ চেষ্টা করতে ব্যস্ত তৃণমূলের লোকজন। কে কতটা প্রচারের আলোয় আসতে পারে, সেই প্রতিযোগিতা চলছে।’’

অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন