Coronavirus

আইআইটি-র অ্যাম্বুল্যান্সে অন্ধ্র গেল ছাত্রের দেহ

মঙ্গলবার সকালেই খড়্গপুরে এসে পৌঁছন মৃত বি কোণ্ডালা রাওয়ের বাবা-সহ অন্য পরিজনেরা। লকডাউনে ভিন্ রাজ্যে যাওয়া নিষিদ্ধ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২০ ০৭:৪৬
Share:

মৃত কোণ্ডালা রাও। ফাইল চিত্র

ই-মেলে পরিবারের অনুমতি নিয়ে ময়নাতদন্ত করা হয়েছিল আগেই। এ বার বিশেষ অনুমতি লকডাউনের মধ্যেই খড়্গপুরে এসে আইআইটি-র মৃত গবেষক ছাত্রের দেহ অন্ধ্রপ্রদেশে নিয়ে গেলেন তাঁর পরিজনেরা। পুলিশের কাছে আসা প্রাথমিক রিপোর্টে আত্মহত্যার ইঙ্গিত মিললেও তার কারণ নিয়ে এখনও ধন্দে পুলিশ।

Advertisement

মঙ্গলবার সকালেই খড়্গপুরে এসে পৌঁছন মৃত বি কোণ্ডালা রাওয়ের বাবা-সহ অন্য পরিজনেরা। লকডাউনে ভিন্ রাজ্যে যাওয়া নিষিদ্ধ। এই পরিস্থিতিতে অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়নগর থেকে পুলিশ সুপারের বিশেষ অনুমতি নিয়ে এসেছিলেন তাঁরা। আইআইটি-র পাশাপাশি খড়্গপুর টাউন থানাতেও গিয়েছিলেন কোণ্ডালার বাড়ির লোক। সোমবার সকালে আইআইটি-র বি আর অম্বেডকর হল (হস্টেল)-এর বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হয় মেক্যানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ওই গবেষক ছাত্রের দেহ। দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশে তাঁর বাড়িতে খবর দেওয়া হয়। ই-মেলে পরিবারের অনুমতি নিয়ে হয় ময়নাতদন্ত। পরে দেহ খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে নিয়ে গিয়ে প্রতিষ্ঠানের বিসি রায় হাসপাতালের ফ্রিজারে রাখেন আইআইটি কর্তৃপক্ষ। সেখান থেকেই এ দিন দুপুরে আইআইটির নিজস্ব অ্যাম্বুল্যান্সে অন্ধ্রপ্রদেশ রওনা দেয় কোণ্ডালা রাওয়ের কফিনবন্দি দেহ। আইআইটি-র রেজিস্ট্রার ভৃগুনাথ সিংহ বলেন, “ওই ছাত্রের পরিজনেরা অন্ধ্রপ্রদেশ থেকেই বিশেষ অনুমতি নিয়ে গাড়িতে এখানে এসেছিলেন। আমরা এখান থেকে যাবতীয় অনুমতি নিয়ে আমাদের পড়ুয়াকে শেষ বিদায় জানিয়েছি। লকডাউনে পথে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সে জন্য যোগাযোগও রাখছি।” তদন্তের স্বার্থে খড়্গপুরেই রয়ে গিয়েছে কোণ্ডালার ল্যাপটপ ও মোবাইল।

কোণ্ডালার মৃত্যু-রহস্য অবশ্য স্পষ্ট হয়নি। কী কারণে তিনি আত্মহত্যা সেই ধন্দ কাটেনি। কোণ্ডালার বাবা বিএস ভাস্কর রাও, কাকা কামেশ্বর রাও ও জামাইবাবু নরসিংহ মূর্তি এ দিন দেখা করেন আইআইটি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। আইআইটির হাসপাতালে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন আইআইটির অধিকর্তা বীরেন্দ্রকুমার তিওয়ারি, রেজিস্ট্রার ভৃগুনাথ সিংহ-সহ অধ্যাপকেরা। আইআইটি কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁদের তদন্তে প্রতিষ্ঠান ও পড়াশোনার দিক থেকে কোনও সমস্যা দেখা যায়নি। তবে কেন এই আত্মহত্যা? অন্ধকারে পরিজনেরাও। আইআইটি-র রেজিস্ট্রার ভৃগুনাথ বলেন, “ওই গবেষক পড়ুয়া পড়াশোনায় খুব ভাল ছিল। সুতরাং শিক্ষা সংক্রান্ত কোনও কারণ থাকার কথাই নয়। আমরা ওর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। ওঁরাও সজ্জন মানুষ। কিছু বলতে পারেননি। তবে পারিবারিক কোনও বিষয় থাকলেও থাকতে পারে। সেটা পুলিশ তদন্ত করুক।”

Advertisement

পুলিশ অবশ্য এ দিন পর্যন্ত তদন্তে অগ্রগতির কথা শোনাতে পারেনি। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “তদন্তে নতুন করে কিছু জানা যায়নি।” পুলিশ জানিয়েছে, কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করেননি কোণ্ডালার পরিজনেরা। এ দিন আইআইটির অতিথি নিবাসে বসেই কোণ্ডালার জামাইবাবু নরসিংহ মূর্তি বলেন, “আইআইটি কর্তৃপক্ষ সে ভাবে কিছুই বলতে পারছেন না। উল্টে আমাদের থেকে জানতে চাইছেন। ও পড়াশোনায় খুব ভাল ছিল। আর পারিবারিক কোনও সমস্যা আমাদের নেই। রবিবার ওর স্ত্রী ফোন করে ওকে না পাওয়ায় আমাদের জানিয়েছিল। সহপাঠীরা বলেছে রবিবার দুপুরে মেসে খেতে দেখেছে। জানি না কী থেকে কী হয়ে গেল!”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement