রেকর্ড জমিতে বোরো চাষ, দাম নিয়ে উদ্বেগে চাষিরা

চলতি বছরে রেকর্ড পরিমাণ আলুর ফলন হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। কিন্তু আলুর দাম কম হওয়ায় ক্ষতির মুখে চাষিরা। আলুর সহায়ক মূল্য বৃদ্ধি, সকল চাষির থেকে সরকারি ভাবে আলু কেনার দাবিতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আলু চাষিদের বিক্ষোভও চলছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জেলায় আলুচাষিদের আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে। অন্য বছরের তুলনায় এ বার জেলায় বোরো চাষের জমির পরিমাণও বেড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৫ ০১:৫৪
Share:

চলছে ধান জমিতে কীটনাশক দেওয়ার কাজ। — নিজস্ব চিত্র।

চলতি বছরে রেকর্ড পরিমাণ আলুর ফলন হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। কিন্তু আলুর দাম কম হওয়ায় ক্ষতির মুখে চাষিরা। আলুর সহায়ক মূল্য বৃদ্ধি, সকল চাষির থেকে সরকারি ভাবে আলু কেনার দাবিতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আলু চাষিদের বিক্ষোভও চলছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জেলায় আলুচাষিদের আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে। অন্য বছরের তুলনায় এ বার জেলায় বোরো চাষের জমির পরিমাণও বেড়েছে। কিন্তু আমন ধানের দাম কম থাকায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বোরো চাষিরা। অনেকে আলু চাষের ক্ষতি পুষিয়ে নিতেও বোরো চাষের দিকে ঝুঁকেছিলেন। বোরো ধানের দাম নিয়ে চিন্তায় তারাও।

Advertisement

কৃষি দফতর সূত্রের খবর, এ বার ১ লক্ষ নব্বই হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। গত বছর ১ লক্ষ ছিয়াত্তর হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছিল। সাধারণত জানুয়ারি মাস থেকে বোরো ধানের চারা রোপণ শুরু হয়। কৃষি দফতরের আশা, এ বার জেলায় বোরো ধানের ফলনও ভাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছর জেলায় আমন ধানের ফলনও ভাল হয়েছিল। প্রথম দিকে ধানের দামও ভাল ছিল। কিন্তু এখন ধানের দাম কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার একশো টাকা প্রতি কুইন্ট্যাল। ফলে বোরোর দাম নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন চাষিরা। জেলার সহ কৃষি-অধিকর্তা দুলাল দাস অধিকারী বলেন, “এ বার জেলায় রেকর্ড পরিমাণ ১ লক্ষ ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে।”

কৃষি দফতরের উপ-কৃষি অধিকর্তা নিমাইচন্দ্র রায় বলেন, “ক্যাম্প করে আমরা এ বার চাষিদের ডাল শস্য, তিল শস্য চাষ করার জন্য আর্জি জানিয়েছিলাম। কিন্তু চাষিদের অধিকাংশই বিকল্প চাষের কথা না শুনে বোরো চাষের দিকে ঝুঁকেছেন।” তাঁর বক্তব্য, “নিজের জমিতে কোনও চাষি ইচ্ছামতো ফসল চাষ করতেই পারেন। এ ক্ষেত্রে তাঁরা ফলন ও দাম পেলে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তবে আমরা সবসময় বিকল্প চাষের জন্য চাষিদের উত্‌সাহিত করতে প্রচার চালাই।” এ বার অনেক চাষি প্রাথমিক ভাবে আলু চাষের প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন। কিন্তু পরে তাঁরা বোরো চাষ করেছেন এমন নজিরও রয়েছে।

Advertisement

ঘাটালের সুলতানপুরের চাষি শেখ ইসমাইল, অরুপ ধাড়া বলেন, “বরাবরই আমরা এই সময় বোরো চাষ করি। বোরোর আগে আলু চাষও করেছিলাম। তখন কী জানতাম, আলু চাষ করে এই অবস্থা হবে।” একইভাবে, কেশপুরের এক চাষি অরিন্দম সরকারও বলেন, “এখন চাষিরা সারাবছরই জমিতে কিছু না কিছু ফসল চাষ করেন। আলু ওঠার আগেই অনেকে বোরো চাষ করেছেন। আবার অনেকে আলু চাষের ক্ষতি পূরণের জন্য ধান চাষ করেছেন। ফলে চিন্তা তো রয়েইছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন