তহবিলে টান, অভাব কর্মীর

মশার জন্য দায়ী নালাই, মত পুরবাসীর

এগরার দিঘা মোড়ের কাছে ব্যবসায়ী পিন্টু জানার কথায় , “সবচেয়ে খারাপ অবস্থা শ্মশান কালীমন্দিরের পেছন থেকে দিঘা মোড়ের দিকে যাওয়া নিকাশি নালার।

Advertisement

শান্তনু বেরা

কাঁথি শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৭ ০১:৩৫
Share:

বদ্ধ: নোংরা জমে নিকাশি নালার হাল। নিজস্ব চিত্র

বৃষ্টি শুরু হতেই বিভিন্ন এলাকায় জল জমতে শুরু করেছে। আর সেই সঙ্গে প্রচণ্ড বেড়ে গিয়েছে মশার উপদ্রব। এতটাই যে এগরা পুরসভার প্রায় বেশিরভাগ ওয়ার্ডে ২৪ ঘণ্টাই মশারি টাঙিয়ে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন বাসিন্দারা। খাওয়া-দাওয়া, পড়াশোনা এমনকী টিভিও দেখতে হচ্ছে মশারির ঘেরাটোপে।

Advertisement

মশার দাপটের জন্য শহর জুড়ে অবরুদ্ধ নিকাশি ব্যবস্থাই দায়ী বলে মনে করেন পুর এলাকার বাসিন্দারা। এগরার দিঘা মোড়ের কাছে ব্যবসায়ী পিন্টু জানার কথায় , “সবচেয়ে খারাপ অবস্থা শ্মশান কালীমন্দিরের পেছন থেকে দিঘা মোড়ের দিকে যাওয়া নিকাশি নালার। মাস আটেক আগে ওই নিকাশি নালা তৈরি হয়েছে। কিন্তু নিয়মিত পরিষ্কার না হওয়ায় তা প্রায় বুজে যেতে বসেছে। সরে না জল।’’ ফলে জমা জলে অনায়াসে বংশবৃদ্ধি করে চলেছে মশককুল। আবার দিঘা মোড়, সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড কলেজ রোড-সহ পুর এলাকার বেশ কিছু জায়গায় নিকাশি নালার কোনও ঢাকনা নেই। ওই সব নিকাশি নালাও নিয়মিত পরিষ্কার হয় না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। আর এ সবের জন্য মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ পুরবাসী। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা গগন দিন্দার অভিযোগ, ‘‘মশার উৎপাতে এমন অবস্থা যে খাওয়াদাওয়া পর্যন্ত মশারির ভিতরে করতে হচ্ছে। পুরসভার লোকজনকে মশার তেল স্প্রে করতেও দেখা যায় না।’’ একই অভিযোগ আরও কয়েকটি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদেরও।

এগরা পুরসভার চেয়ারম্যান শঙ্কর বেরা যদিও এ সব অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, ‘‘সব ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি ময়লা নিতে নিয়মিত সাফাই কর্মীরা যায়। সপ্তাহে একবার মশা মারার ওষুধ স্প্রে ও আবর্জনা ফেলার জায়গায় ব্লিচিং ছাড়ানো হয়।’’ তবে একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, ‘‘অধিকাংশ দোকানদার রাতে তাঁদের বর্জ্য নিকাশি নালায় ফেলেন। এর ফলে নিকাশি ব্যাহত হচ্ছে।’’ তিনি জানান, এর জন্য পুরসভা শীঘ্রই জরিমানা ব্যবস্থা চালু করবে।

Advertisement

এগরা পুরসভা

যে সমস্ত এলাকায় মশার লার্ভা মিলেছে

২০১৬

• জ্বরে আক্রান্ত ৩

• ম্যালেরিয়া ০

• ডেঙ্গি উপসর্গ ১

২০১৭

• জ্বরে আক্রান্ত ৬

ওয়ার্ড এলাকা

• ২ দলওলমা

• ৪ ওলমা

• ১১ জগন্নাথপুর

• ১৪ আদলাবাদ

কিন্তু শুধু জরিমানা করলেই কি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? সংস্কার না হওয়া নিকাশি নালা, খাল পরিষ্কারের কী হবে?

পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, পুর এলাকায় ১৪ টি ওয়ার্ডের জন্য পর্যাপ্ত পুরকর্মী নেই। তবুও অপর্যাপ্ত কর্মী দিয়েই যথাসাধ্য সাফাইয়ের কাজ করা হচ্ছে। তা ছাড়া পুরসভার কোনও পতঙ্গবিদ্ও নেই। টাকারও অভাব রয়েছে। তবে নিকাশি নালায় ময়লা ফেলা নিয়ে পুরবাসী যদি সচেতন হন তাহলে শহর পরিষ্কার থানার পাশাপাশি মশার উপদ্রবও কমবে বলে দাবি পুরপ্রধানের।

কিন্তু যেখানে নিয়মিত মশানাশক তেল স্প্রে করা হয় না, সেখানে মশার উৎপাত কী ভাবে কমবে সেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এগরা কলেজ রোডের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘মাঝে মাঝে স্প্রে হলেই নালা থেকে মশা এসে বাড়িতে ঢোকে। সে আর এক সমস্যা।

পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, ১৪টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলারদের দিয়ে প্রতি ওয়ার্ডে জন সচেতনতায় সেমিনার করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন