হতশ্রী: এমনই দশা খড়্গপুরের মালঞ্চ এলাকার জমিদার পুকুরের। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজো, কালীপুজো শেষ। এ বার শুরু হয়েছে ছটপুজো। মঙ্গলবার ছিল ‘কাদ্দু’। আজ, বুধবার হবে ‘খরনা’। আর কাল, বৃহস্পতিবার পুকুরঘাটে আচার মেনে চলবে সূর্যদেবের আরাধনা।
অথচ খড়্গপুরের বেশিরভাগ পুকুরই এখন দূষিত। জলে ভাসছে কালীপ্রতিমার কাঠামো, খড়, ফুল-পাতা। কোথাও কাঠামো তুলে পুকুরঘাটেই জড়ো করে রাখা হয়েছে। জোঁক-পোকায় দূষিত হয়ে গিয়েছে জল। পুরসভা এখনও পুকুর সাফাইয়ে হাত দেয়নি। ফলে, কীভাবে ছটপুজো হবে তা নিয়ে আশঙ্কায় শহরবাসী।
রেলশহরে এখন পুকুর ভরাট করে অনেক বাড়ি হচ্ছে। ফলে, পুকুরের সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। ছটপুজোয় তাই শহরের বড় পুকুরঘাটগুলোই ভরসা। মূলত বিহারিদের এই উৎসবে প্রতিবছর ভিড় জমে মন্দিরতলা, পদ্মপুকুর, ইন্দা স্কুলের পুকুর, ভগবানপুর জিন পুকুরে। ছটপুজোর আগে শহরের সব পুকুর পরিষ্কার করার কথা বলেছে পুরসভা। যদিও দুর্গাপুজো থেকে কালীপুজো পর্যন্ত বিসর্জনের পরে প্রতিটি পুকুরই এখন হতশ্রী এবং মঙ্গলবার পর্যন্ত পুরসভা সাফাইয়ে হাত দেয়নি। অনেক এলাকায় স্থানীয়রাই উদ্যোগী হয়েছেন। যেমন, মন্দিরতলা পুকুর, জিন পুকুর থেকে এ দিন কাঠামো তুলতে দেখা গিয়েছে এলাকাবাসীকে। জিন পুকুরের ধারেই বাড়ি কৃষ্ণ গোস্বামীর। তাঁর কথায়, “আমরা বিহারি। বৃহস্পতিবার এই পুকুরেই সূর্য প্রণাম হবে। কিন্তু জলে যা পোকা তাতে পুকুরে নামব কী করে! পুরসভার পক্ষ থেকে পুকুর পরিষ্কার করে দিলে ভাল হত।”
শহরের পদ্মপুকুর, মালঞ্চ চণ্ডীপুর পুকুরে প্রতিমার কাঠামো এখনও পড়ে রয়েছে। চণ্ডীপুরে কাঠামোর সঙ্গে পুকুরে পড়ে রয়েছে আবর্জনাও। তা থেকে ছড়াচ্ছে দুষণ। অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। স্থানীয় অর্চনা সরকার বলেন, “দুর্গাপুজোর পরে পুরসভার উদ্যোগে পুকুর পরিস্কার হয়েছিল। কিন্তু কালীপুজোর বিসর্জনে ফের দূষিত হয়েছে পুকুর।” অবশ্য এ দিন পুর-উদ্যোগে পরিষ্কার করা হয়েছে ইন্দা বয়েজ স্কুলের পুকুর। এ ভাবেই শহরের বাকি পুকুরগুলিও পরিষ্কার হবে বলে দাবি করছে পুরসভা। কিন্তু হাতে তো শুধু বুধবার। এই একদিনে কীভাবে শহরের সব পুকুর পরিষ্কার হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার অবশ্য বলেন, “যে সব পুকুরে ছটপুজো হয় সেগুলিকে আমরা আগে পরিষ্কার করে দিচ্ছি। কাজ শুরুও হয়েছে। ছটপুজোর আগে পুকুরঘাট সাজিয়ে দেওয়া আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ।”