হস্তিশাবকের দেহ। নিজস্ব চিত্র
একটি হস্তিশাবকের মৃত্যু হয়েছে শালবনির মৌপাল বিটের শুশনিবেড়্যায়। শুক্রবার ভোরে জঙ্গলে শাবকটিকে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পৌঁছন বনকর্মীরা। কী কারণে হস্তিশাবকের মৃত্যু তা খতিয়ে দেখছে বন দফতর। সামনে আসছে নানা সম্ভাবনা, তার একটি মাতৃদুগ্ধের অভাব।
মাতৃদুগ্ধের অভাবেই কি শাবকটির মৃত্যু হয়েছে? মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “ঠিক কী কারণে হস্তিশাবকটির মৃত্যু হয়েছে তা দেখা হচ্ছে।” বন দফতরের এক কর্তা মানছেন, “কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় কোনও রোগে ভুগে শাবকের মৃত্যু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।” এ দিন পশু চিকিত্সকেরা ঘটনাস্থলে যান। হস্তিশাবকটির ময়নাতদন্ত হয়েছে।
শালবনিতে কিছু হাতি রয়েছে। কয়েকটি দলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে তারা। ইতিমধ্যে হাতির দলের হানায় কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শালবনির মৌপাল বিটে প্রায় ৩২- ৩৫টি হাতির একটি দল রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, দলে একাধিক শাবক রয়েছে। এরই একটিতে শুক্রবার ভোরে মৃত অবস্থায় দেখেছেন গ্রামবাসীরা।
জঙ্গলমহলে হস্তিশাবকের মৃত্যুর ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও ঘটেছে। কখনও ট্রেনে কাটা পড়েও শাবকের মৃত্যু হয়েছে। আবার কখনও খাবারের অভাবে শাবকের মৃত্যু হয়েছে। মেদিনীপুরের এক বনকর্মী মানছেন, “কখনও দেখা যায় যে শাবক তার মায়ের স্নেহ পায় না। কোনও কারণে দূরে ঠেলে দেয়।” পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, জঙ্গলে দলবেঁধেই হাতিগুলো রয়েছে। এ ক্ষেত্রে এমন সম্ভাবনা কম। মাতৃস্তন্যের অভাবে কী রোগ হয়? পশু চিকিত্সকেরা জানাচ্ছেন, মাতৃস্তন্যের অভাবে অ্যানোক্সি-অ্যানোক্সিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে হস্তিশাবক। মাতৃদুগ্ধের অভাবে হাতির শাবকদের শরীরে এই রোগের সংক্রমণ ছড়ায়। এই রোগে আক্রান্ত হলে শাবক ধুঁকতে থাকে। ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ে। শেষমেশ দাঁড়িয়ে থাকার ক্ষমতাও হারায়। মেদিনীপুরের এক বনকর্তা বলেন, “এ ক্ষেত্রে এমন কোনও লক্ষ্মণ দেখা গিয়েছিল কি না, তা-ও নানা ভাবে জানার চেষ্টা চলছে।”
মা মুখ ফিরিয়েছিল কি না, ফেরালে কেন, সেই সব প্রশ্নের উত্তর অধরাই। শেষমেশ হেরে গিয়েছে হস্তিশাবকটি। শাবকটির বয়সও খুব বেশি ছিল না। মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহার কথায়, “হস্তিশাবকটির বয়স ৫-৬ মাস হবে।” হস্তিশাবকের মৃত্যুর খবর পেয়ে স্থানীয়রা জঙ্গলে ভিড় করেন।