দাম নেই, ক্ষোভ বাদাম চাষিদের

ফুল, সব্জি চাষের সাথে অর্থকরী ফসল হিসেবে চিনা বাদাম চাষের রেওয়াজ বাড়ছে পাঁশকুড়া এলাকায়। কিন্তু উৎপাদিত বাদাম ব্যবহার করে বাদাম তেল তৈরির কারখানা, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র চালু না হওয়ায় ব্যবসায়ীদের কাছে কম দামে বাদাম বিক্রি করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ বাদাম চাষিদের।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

তমলুক শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৭ ০১:০৫
Share:

ফুল, সব্জি চাষের সাথে অর্থকরী ফসল হিসেবে চিনা বাদাম চাষের রেওয়াজ বাড়ছে পাঁশকুড়া এলাকায়। কিন্তু উৎপাদিত বাদাম ব্যবহার করে বাদাম তেল তৈরির কারখানা, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র চালু না হওয়ায় ব্যবসায়ীদের কাছে কম দামে বাদাম বিক্রি করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ বাদাম চাষিদের।

Advertisement

ব্লক কৃষি দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধান, সব্জি, ফুল চাষের মতো ব্যাপক হারে না হলেও পাঁশকুড়া ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় বাদাম চাষের রেওয়াজ দীর্ঘদিনের। মাইশোরা, কেশাপাট, গোবিন্দনগর, রাধাবল্লভচক, ঘোষপুর, চৈতন্যপুর, প্রতাপপুর, মহৎপুর, নারন্দা, বালিডাংরি এলাকায় চিনা বাদাম চাষ করেন বহু কৃষক। ব্লকে এখন প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয় থাকে। জলসেচের পরিমাণ কম প্রয়োজন হয় বলে অনেক কৃষক ধানের বদলে বাদাম চাষের দিকে ঝুঁকছে। প্রতি বছর বাদাম চাষের এলাকা বাড়ছে। কিন্তু অর্থকরী ফসল হিসেবে ক্রমশ বাদাম চাষের পরিমাণ বাড়লেও উৎপাদিত বাদাম বিক্রির সমস্যায় লাভ ক্রমশ কমছে বলে চাষিদের অভিযোগ।

মদনমোহনপুরের শম্ভুনাথ পাত্র দেড় বিঘে জমিতে বাদাম চাষ করেন। শম্ভুনাথবাবু বলেন, ‘‘বাদাম চাষের জন্য বীজ কিনতে হয় ৮০-৯০ টাকা কিলোগ্রাম দরে। অথচ মাঠ থেকে বাদাম তোলার পর তা ব্যবসায়ীদের বিক্রি করতে হয় ৪০-৫০ টাকা কিলোগ্রাম দরে। ব্যবসায়ীদের মর্জিমতো দামে বাদাম বিক্রি করতে হয়।’’ মাইশোরা পঞ্চায়েতের পশ্চিম গুড়তলা গ্রামের চাষি স্বপন খাঁড়া দু’বিঘে জমিতে বাদাম চাষ করছেন পাঁচ বছর ধরে। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘আগে জমিতে বোরো ধান চাষ করতাম। কিন্তু জলসেচের সমস্যা হওয়ায় দু’বিঘে বাদাম চাষ করি। ধানের চেয়ে বাদাম চাষ কিছুটা লাভজনক। তবে এলাকায় তেল বা বাদামজাত খাবারের কারখানা হলে হলে আরও ভাল দাম পাওয়া যেত।’’

Advertisement

বাদামের খোলা ছাড়ানো, ঝাড়াই বাছাই করার জন্য পাঁশকুড়া পুরাতনবাজার ও প্রতাপপুর এলাকায় ছোট-বড় প্রায় ১৫ টি হাস্কিং মিল রয়েছে। এইসব মিলে গড়ে ২০-২৫ জন করে শ্রমিক কাজ করেন। পাঁশকুড়া পুরাতনবাজারে ১৫ বছর ধরে মিল চালানো চুনিলালবাবু বলেন, ‘‘আগের চেয়ে বাদাম চাষের পরিমাণ বেড়েছে। বাদাম মিলের সংখ্যাও বেড়েছে। এখন কেশপুরে প্রচুর বাদাম চাষ হচ্ছে। কিন্তু এখানে বাদাম তেল তৈরি বা বাদামজাত বিভিন্ন খাবার তৈরির কারখানা না থাকা কলকাতায় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতে হয়।’’

সমস্যার কথা স্বীকার করে ব্লক কৃষি আধিকারিক বিবেকানন্দ মোহান্তি বলেন, ‘‘এলাকায় বাদাম ক্রমশ চাষ বৃদ্ধি হচ্ছে। সেদিকে লক্ষ্য রেখে এলাকায় সরকারি উদ্যোগে বাদাম তেল তৈরির ইউনিট চালুর জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। ফলে কৃষকরা উপকৃত হবে বলে আশা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন