সহায়ক মূল্যে আলু কেনার দাবি চাষিদের

জমি থেকে জ্যোতি আলু তোলার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আলুর লাভজনক দর না মিলছে না বলে দাবি চাষিদের। লোকসান সামলাতে সহায়ক মূল্যে আলু কেনার দাবি জানাচ্ছেন চাষিরা। বিষয়টি নিয়ে কালনার মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে কংগ্রেসও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৭ ০১:২৩
Share:

লোকসান: মাঠেই পড়ে রয়েছে আলু। নিজস্ব চিত্র

জমি থেকে জ্যোতি আলু তোলার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আলুর লাভজনক দর না মিলছে না বলে দাবি চাষিদের। লোকসান সামলাতে সহায়ক মূল্যে আলু কেনার দাবি জানাচ্ছেন চাষিরা। বিষয়টি নিয়ে কালনার মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে কংগ্রেসও।

Advertisement

শুধু বর্ধমান নয়, রাজ্যের আরও দুই আলু উৎপাদক জেলা হুগলি এবং পশ্চিম মেদিনীপুরেও মাঠ থেকে আলু তোলা শুরু হতেই মাথায় হাত পড়েছে চাষিদের। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এ বার প্রচুর পরিমাণ জলদি আলুর ফলন হয়েছে। আর তাতেই ক্রমাগত পড়তে পড়তে তলানিতে এসে ঠেকেছে আলুর দাম। অবস্থা এমন যে অনেক জায়গাতেই চাষিরা মাঠ থেকে আলু তোলা বন্ধ করে দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্তরা চাষিরা তাই বিপদ বুঝে ধানের মতোই সরকার যাতে সহায়ক মূল্যে আলু কিনে নেয় সেই দাবি তুলেছেন।

এ বার আলু চাষের শুরু থেকেই নোট বাতিলের জন্য একের পর এক সমস্যায় নাজেহাল হতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। তাঁদের দাবি, বাজারে নগদের জোগান কম থাকায় জমি থেকে আমন ধান তুলতে দেরি হয়েছে। তার উপর আলু বীজ, সার-সহ নানা সামগ্রী কিনতে গিয়ে সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে। এর ফলে নির্ধারিত সময়ে আলু চাষ শুরু করা যায়নি।

Advertisement

বর্ধমান জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ফি বছর জেলায় আলুর ফলন হয় ১৮ লক্ষ মেট্রিক টনেরও বেশি। তবে এ বার ফলন কিছুটা কম হয়েছে। অন্যান্য বার বিঘা প্রতি ১০০ থেকে ১১০ বস্তা আলু মিললেও এ বার তার পরিমাণ ৮০-৯০ বস্তা। বস্তা পিছু আলুর দর মিলছে ১৮০ টাকার মতো। এই দরে বিক্রি করলে বিঘা প্রতি প্রায় ১০ হাজার টাকা করে ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি চাষিদের। অথচ বিঘা প্রতি জমিতে আলু চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ২৩ হাজার টাকা।

দর না থাকায় গ্রামে ফড়েদেরও তেমন দেখা মিলছে না বলে দাবি চাষিদের। এই পরিস্থিতিতে কালনার কেশবপুরের চাষি হোপনা সরেন বলেন, ‘‘অনেকে হিমঘরে আলু মজুত করছেন। কী ভাবে ব্যাঙ্ক, সমবায়ের ঋণ শোধ হবে, জানি না।’’

পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারের কাছে সহায়ক মূল্যে আলু কেনার দাবি জানিয়েছেন মেমারির চাষি গোপাল চট্টোপাধ্যায়। একই দাবিতে পথে নেমেছে জেলা ‘কৃষি ও কৃষক বাঁচাও কমিটি’, সিপিএমের কৃষকসভা এবং কংগ্রেস। শনিবার কংগ্রেসের তরফে এই দাবিতে কালনার মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেস নেতা রবীন্দ্রনাথ মণ্ডলের দাবি, ‘‘সরকার কুইন্ট্যাল প্রতি ৭০০ টাকা দরে আলু ও ৮০০ টাকায় পেঁয়াজ কিনুক সরকার। সরকার দ্রুত পদক্ষেপ না করলে সমস্যা আরও বাড়বে।’’ মহকুমাশাক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, ‘‘বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’’ এর আগে পশ্চিম মেদিনীপুরেও রাস্তায় আলু ফেলে এই একই দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছে চাষিরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন