—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মেয়ে বড় হয়েছে। তাই তার বিয়ে দিতে উঠে পড়ে লেগেছিলেন বাবা। কিন্তু পাত্র ঠিক করলেন নিজের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর সহোদরকে। সম্বন্ধ শুনে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন ২০ বছরের মেয়ে। অন্য দিকে, বাবার ‘আদেশ’ সৎমামাকেই বিয়ে করতে হবে। মেয়ে রাজি না-হওয়ায় পছন্দের পাত্রকে ঘরে ডেকে মেয়ের সম্ভ্রম হরণ করান বাবা। এমনই মারাত্মক অভিযোগ উঠল পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং থানা এলাকায়। পুলিশ বাবাকে গ্রেফতার করেছে। সৎমামা তথা ‘সৎপাত্র’ পলাতক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, বছর আটেক আগে মৃত্যু হয় প্রীতিলতার (নাম পরিবর্তিত) মায়ের। বাবা আবার বিয়ে করেন। প্রীতিলতার অভিযোগ অনুযায়ী, সৎমা তাঁর এবং তাঁর বোনের সঙ্গে বিনা কারণে খারাপ ব্যবহার করেন। পান থেকে চুন খসলে গালাগালি, হেনস্থা। বাবার কাছে এ নিয়ে কিছু বলতে পারেন না তাঁরা। কারণ, বাবা-ই একাধিক বার তাঁর সঙ্গে কুৎসিত আচরণ করেছেন। প্রীতিলতার অভিযোগ, ‘‘রাতে তার সঙ্গে একই বিছানায় শুতে জোর করত বাবা। নানা অছিলায় খারাপ ভাবে স্পর্শ করত।’’
সেই মেয়ে হঠাৎ জানতে পারেন বাবা তাঁর বিয়ে ঠিক করেছেন। পাত্র? সৎমায়ের আপন ভাই! এটা কেমন করে হয়? প্রশ্ন করায় শুরু হয় অত্যাচার। প্রীতিলতার অভিযোগ, গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ ওই সৎমামাকে বাড়িতে ডেকে আনেন বাবা। দু’জনে মিলে ঘরে বসে মদ্যপান করেন। তার পর ডাক পড়ে তাঁর। মেয়েকে ডেকে বাবা বলেন, সৎমামাকেই বিয়ে করতে হবে। মুখের উপর ‘না’ বলতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন দু’জন। এর পর সৎমামা তাঁকে বিয়ের জন্য জোরাজুরি করেন। নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন প্রীতিলতা।
এর পর ঘরে ঢুকে সৎমামা তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ প্রীতিলতার। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, কোনওক্রমে নিজেকে বাঁচিয়ে পালিয়েছেন তিনি। সিদ্ধান্ত নেন এ বার পুলিশের কাছে যাবেন।
এমন মারাত্মক অভিযোগ পাওয়ার পর বুধবার সকালে অভিযোগকারিণীর বাবাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে প্রীতিলতার সৎমামার খোঁজ মেলেনি এখনও। তাঁর খোঁজ চলছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) ১১৫ (২), ৭৪, ৬৪, ৬২, ৩৫১ (২) ইত্যাদি ধারায় ধৃতের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে।