‘একটা জায়ান্ট স্ক্রিনের ব্যবস্থা করতেই হবে।’
সকাল থেকে পরপর ফোনে একই কথা শুনতে শুনতে হাঁপিয়ে উঠছিলেন মেদিনীপুরের সুবীর সামন্ত। সুবীরও বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন, “যা স্ক্রিন ছিল সবই ‘বুক’ হয়ে গিয়েছে। আর একটাও স্ক্রিন নেই। না- থাকলে দেবো কী ভাবে!”
আজ, রবিবার ভারত-পাক মহারণ, তাও আবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে। চাক্ষুষ না হোক, টিভির পর্দায় সেই লড়াই দেখার সুযোগ কে-ই বা ছাড়তে চায়। তাই একা নয়, সকলে মিলে খেলা দেখার জন্য জায়ান্ট স্ক্রিনের ব্যবস্থা করতে চাইছেন সকলে। তার জন্য দ্বিগুন টাকা লাগলেও দিতে রাজি সকলে।
জায়ান্ট স্ক্রিনের ভাড়াও কম নয়। দিনে দশ হাজার টাকা। সুবীর বলছিলেন, “যে দিন ভারত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে উঠেছে তার পরের দিনই সব স্ক্রিন ‘বুক’ হয়ে গিয়েছে। শুধু মেদিনীপুর-খড়্গপুর নয়, পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের লোকজনও জায়ান্ট স্ক্রিনের খোঁজ করছেন।
সুবীরের কাছে সাতটি জায়ান্ট স্ক্রিন রয়েছে। রবিবার সকালেই সেগুলো বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে যাবে। বারোটি বড় এলইডি ছিল। তাও ‘বুক’ হয়ে গিয়েছে। এক-একটি এলইডির ভাড়া দিনে দেড় হাজার টাকা। মেদিনীপুরের অগ্নিকন্যা ক্লাবের বুদ্ধ মণ্ডল, শিশির হাজরারা বলছিলেন, “বড়পর্দায় খেলা দেখার ইচ্ছা রয়েছে। এ দিন সকাল থেকে কত জায়গায় খোঁজ করেছি। একটাও বড়পর্দা পাইনি। শহরের বাইরে কোথাও বড়পর্দা রয়েছে কি না দেখছি। যদি থাকে ক্লাবের সকলে চাঁদা দিয়ে ভাড়া করে আনব।’’ একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘বড়পর্দায় খেলা দেখা মজা সত্যিই আলাদা। মনে হয় স্টেডিয়ামেই রয়েছি!”
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অভিযান শুরু হয়েছিল ভারতের। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দেন বিরাট কোহালিরা। ট্রফি জয়ের স্বপ্ন দেখা শুরু তখন থেকেই। সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে পাকিস্তান। আজ, রবিবার দুপুরে ওভালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ফাইনালের প্রথম বল পড়বে। তার আগেই এই হাই ভোল্টেজ ম্যাচ ঘিরে টগবগ করে ফুটছে গোটা দেশ। বাদ নেই মেদিনীপুরও।
জায়ান্ট স্ক্রিনে খেলা দেখার চল এখন গ্রামাঞ্চলেও। শালবনির মহাশোল নেতাজি স্পোর্টিং ক্লাবের সন্দীপ সিংহ বলছিলেন, “ফাইনালটা দেখতেই হবে। একটা বলও মিস করা যাবে না!” সব মিলিয়ে, মহারণে আঁচে ফুটছে সকলেই।